• অপরাধ ও দুর্নীতি

দিনাজপুর সহযোগিসহ ভুয়া নারী ম্যাজিষ্ট্রেট গ্রেফতার 

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২০ জুন, ২০২৪ ২০:৪৫:৫০

ছবিঃ সিএনআই

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরে সরকারি দপ্তরে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর সহযোগিসহনএকজন ভুয়া নারী ম্যাজিষ্ট্রেটকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার উভয়কে আদালতে তুলে দিয়েছেন তারা। ভুয়া পরিচয়ে প্রতারনা করাই ওই নারীর পেশা।

ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয়ে একাধিক নাম ব্যবহার  করে চাকুরি প্রত্যাশিদের সাথে প্রতারনা করে লাখ লাখ টাকা আদায় করে থাকে ইশরাত জাহান ওরফে আনিকা তাসনিম সরকার। পুলিশের খাতায় পরিচিতি হিসেবে তার দুইটি নাম রেকর্ড পাওয়া গেছে। একটিতে ইশরাত জাহান ওরফে আনিকা তাসনিম সরকার এবং দ্বিতীয় নাম হিসেবে তিশা ওরফে আঞ্জুমান আরা আজমেরি (৩০) উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ওই ভূয়া ম্যাজিস্ট্রেট দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী সরকারর পুতুর মেয়ে। বাড়ী ফুলবাড়ী শহরের কাটাবাড়ী মহল্লায়। বর্তমানে সে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার বিক্রমপুর প্লাজা সংলগ্ন জনৈক আব্দুর রশিদের ম্যাসের নিচতলা রোকেয়া ছাত্রী নিবাসে বসবাস করে বলে দাবি করেছে।

(তার সাবেক স্বামী আব্দুল মান্নান সিলেট জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত আছে। তবে বর্তমানে তারা ডিভোসি।)

আজ বৃহস্পতিবার কোতয়ালী থানায় গন মাধ্যম কর্মীদের কাছে ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেটকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ব্রিফ করেছেন পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত)  মনিরুজ্জামান মনির, ইন্সপেক্টর বিশ্বনাথ দাস গুপ্ত, উপ পরিদর্শক নুর আলম বাবু, উপ পরিদর্শক শামিম হক, মামলা তদন্ত কর্মকতা উপ পরিদর্শক রেজাউল করিমসহ অন্যান্যরা।

জিন্নাহ আল মামুন জানান, গ্রেপ্তার ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট ইসরাত জাহান ওরফে আনিকা তাসনিম সরকার একজন অভ্যাসগত প্রতারক। ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দিয়ে সরকারি দপ্তরে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারনামূলক টাকা কামাই করার তার পেশা। তার বিরুদ্ধে গত বছরের ১৬ জানুয়ারী একটি জাতীয় দৈনিকে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে  নিয়োগের জন্য ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগের মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে৷ মামলা নম্বর ৩৯। তারিখ ১৬ জানুয়ারী ২০২৩। এছাড়াও ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় ২০২১ সালের একটিসহ (মামলা নম্বর ১৫/ ২৭৭) বিভিন্ন স্হানে প্রতারনার মামলা রয়েছে। সব মামলা (সিডিএমএস) তথ্যানুসন্ধ্যান চালাচ্ছেন তারা।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, জামিনে মুক্ত হয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ড্রাইভার পদে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দিনাজপুর জেলা সদরের ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে আল আমিনের কাছে সহযোগি শাহাদাত হোসেনের মধ্যস্হতায় গত বছরের ৯ নভেম্বর দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দেওয়া ইসরাত জাহান ওরফে আনিকা তাসনিম সরকার। এছাড়াও একই ভাবে বিভিন্ন পদে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে জনৈক জুয়েল ইসলামের কাছে ৬৫ হাজার, সুমন আলীর কাছে ১ লাখ ১৫ হাজার, রিনা খাতুনের কাছে ৯০ হাজার, ইমতিয়াজ আলীর কাছে ২ লাখ ২০ হাজার, রাজু বাবুর কাছে ৮৫ হাজার এবং সুয়েজ ইসলামের কাছে ১ লাখ ১০ হাজারসহ মোট ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিযে নিয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে সে।

 এদিকে দীর্ঘদিন পর গতকাল ১৯ জুন বুধবার ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেটকে হাতেনাতে কাছে পেয়ে  জরুরী সেবা কেন্দ্র ত্রিপল নাইন (  999 ) কোল দিয়ে আইনি সহায়তা চায় প্রতারনার শিকার চাকুরি প্রত্যাশি আল আমিন। খবর পেয়ে সহযোগি শাহাদত হোসেনসহ ওই ভূয়া নারী ম্যাজিষ্ট্রেটকে আটক করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। এঘটনায় প্রতারিত আল আমিনের ১৭০/৪০৬/৪২০ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় উভয়কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা নম্বর ৪৭। আজ উভয়কে আদালতে তুলে দিয়েছেন তারা। সহযোগি শাহাদত হোসেনর ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে। ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে প্রথমে প্রতারিত হয়ে পরে সে সহযোগি হিসেবে তার সাথে যোগ দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo