• বিশেষ প্রতিবেদন

হাতুড়ির আওয়াজে মুখরিত কুমিল্লার কামাড়পাড়া

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১৩ জুন, ২০২৪ ১২:২৩:১৭

ছবিঃ সিএনআই

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ  কায়িক পরিশ্রমী এ পেশাজীবীদের কারখানায় চলছে হাপর টানা, পুড়ছে কয়লা ও জ্বলছে লোহা। হাতুড়ি পিটিয়ে কামার তৈরি করছেন গোশত কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিজয়পুরকে কামার পল্লী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এখন লোহা হাতুড়ির টুং-টাং শব্দে মুখরিত। হাতুড়ির আঘাতে তৈরি হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনে কাজের উপযুক্ত সামগ্রী, দা, বটি, চাকু, কুড়াল, ছুরি, চাপাতিসহ ধারালো সব যন্ত্রপাতি।

পবিত্র ঈদ-উল-আজহার (কোরবানি) ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লা নগরীসহ প্রায় উপজেলার সকল হাট-বাজারেই ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কামার পল্লীর শ্রমিকরা। সারা বছর কাজ সীমিত থাকলেও কোরবানির ঈদের এ সময়টাতে বেড়ে যায় তাদের কর্মব্যস্ততা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর চকবাজার আলিয়া মাদরাসার সাথের দোকানগুলোতে তৈরি হচ্ছে কোরবানিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম। এখন সকল কামারের দোকানে বিদ্যুৎ চালিত শান মেশিন ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক কাজ করছেন কামাররা। শান দেয়া হচ্ছে লোহার তৈরি পুরাতন সরঞ্জামও। আবার তৈরিকৃত এসব লোহার পণ্য বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। অন্যদিকে বাড়ি ঘরে পড়ে থাকা দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত (ভোতা) দা, ছুরি, বটি কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সান দিতে মানুষ নিয়ে আসছে কামারের দোকানে। নগরীর বাহিরেও বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজারের দোকান গুলোতে ছুরি, বঁটি, চাপাতি বিক্রি হচ্ছে । প্রতি পিছ চাকু ১০০ থেকে ২৫০ টাকা, দা ৪০০-৬০০ টাকা, ৫০০ টাকা কেজি দরে চাপাতি, জবাই ছুরি ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, এবং বটি ৩০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছে দোকানিরা। এছাড়াও পুরনো সকল যন্ত্রপাতি শান দিতে গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।

 

 

কর্ন চক্রবর্তীসহ একাধিক কামাররা জানান, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে এক সপ্তাহ ভালো বেচাকেনা হয়।

 

 

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর এলাকার লক্ষ্মণ দেব জানান, প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, আর্থিক সঙ্কটসহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প। পাশাপাশি কয়লা আর কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ কমেছে বলেও জানান অন্যান্য শিল্পীরা। বর্তমান অধুনিক যন্ত্রপাতির প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে। ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে ঈদের ডামাডোল।

 

 

দোকানের জ্বলন্ত আগুনের তাপে শরীর থেকে ঝরছে অবিরাম ঘাম। চোখে মুখে প্রচণ্ড ক্লান্তির ছাপ। তবু থেমে নেই তারা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কাজের ব্যস্ততা।

 

 

সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করলেও তাদের মুখে নেই কোনো উচ্ছ্বাস, নেই প্রাণভরা হাসি। তারপরও আসন্ন কোরবানির ঈদের কথা মাথায় রেখে নতুন আশায় বুক বেঁধে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo