![](../admin/upload/post/2024/07/669be56f10.jpg)
দোহার নবাবগঞ্জ, ঢাকাঃ ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক জনপ্রিয় একটি ফল “পিছফল”।
খুব সুস্বাদু এই পিছফল, দেখতে অনেকটাই লিচুর মতো। তবে পিছফলের আকৃতি লিচুর চেয়ে সামান্য ছোট। লিচু টক মিষ্টি হলেও পিছফল মিষ্টি জাতীয় ফল। লিচুর মৌসুম শেষ হতেই থোকা থোকা পিছফল গাছে ঝুলতে থাকে। জুলাই মাস জুড়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে পাওয়া যায় ফলটি। সারাদেশে তেমন একটা না পাওয়া গেলেও ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় অনেক আগে থেকেই ফলটি পাওয়া যায়। তাই এখানকার মানুষের কাছে পিছফলের কদর অনেক বেশি।
বাণিজ্যিকভাবে পিছফলের চাষ না হলেও নিজ পরিবার এবং আত্মীয়- স্বজনকে দেয়ার পাশাপাশি অনেকে বিক্রিও করে থাকেন স্থানীয় বাজারগুলোতে। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায় বলে গাছের প্রতি যত্নশীল হচ্ছে এলাকার মানুষজন। পিছফলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গাছ কিনে ফল বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। যে কারণে ব্যবসায়ীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এ ফলের গাছ কিনে থাকেন। তাই দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ ফলটি।
সম্প্রতি ঢাকার ব্যবসায়ীরাও দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে ফল সংগ্রহ করে বিক্রি করছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। যার দরুণ পিছফলের বাজার স¤প্রসারণের পাশাপাশি মানুষের কাছে এর বিস্তৃত বাড়ছে। পিছফল স্তন্যপায়ী প্রাণী বাদুরের প্রিয় খাবার। তাই সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই বাদুর ফল খাওয়ার জন্য গাছে গিয়ে বসে। কিন্তু গৃহস্থ তো বাদুরের চেয়ে কম চালাক নয়। ফল রক্ষার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন গাছের মালিকরা। কেউ পিছফল রক্ষায় গাছে মশারি দিয়ে ফল ঢেকে রাখেন। আবার কেউ কাপড় কিংবা পলিথিন দিয়ে বেঁধে রাখেন। আবার গাছের মধ্যে শব্দযন্ত্র বেঁধে দড়ি টেনে বাদুর তাড়িয়ে থাকেন। দোহার ও নবাবগঞ্জ এ দুটি উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতে এই ফলের গাছ রয়েছে। ফল পাকার সময় হলে সংরক্ষণের জন্য মশারি দিয়ে ঢেকে রাখছে গাছের মালিকরা। গাছ ছোট হলে ২/৩টি মশারিতে হয়ে যায়। আর বড় আকৃতির হলে অনেক বেশি মশারি লাগে।
এ বছর ঢাকার দোহার উপজেলার পালামগঞ্জ বাজারের পাশেই বিশাল আকৃতির একটি পিছফল গাছ সবার নজর কেড়েছে। এ গাছটিতে অন্তত ১৫টি মশারি টানানো হয়েছে। স্থানীয়রা বাজারের পাশে এতো বড় গাছ দেখে রীতিমতো অবাক হচ্ছেন ফল পাকা শুরু হলে প্রায় ৩০ দিনের মতো গাছে থাকে। এর মধ্যেই গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করতে হয়। তাই প্রতি বছর জুলাই মাস এলেই আগে থেকেই পিছফল রক্ষার জন্য নতুন পুরাতন মশারি সংগ্রহ করে থাকেন মালিকরা।
জয়পাড়া বাজারের মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বেপারী বলেন, ‘আমি সারা বছর অন্য কাজ করি। কিন্ত পিছফলের চাহিদা থাকায় বছরের এই সময়টা পিছফল বিক্রি করি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে গাছে ফল আসার সাথে সাথে মালিকের কাছ থেকে আমরা গাছ কিনে নিই। পরে পরিপক্ক হলে তা বাজারে বিক্রি করি। বাদুর ফল খেয়ে ফেলায় অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।’ নবাবগঞ্জ বাজারের ফল ব্যবসায়ী রফিক মোল্লা বলেন, “আমি ২০/২৫ টা গাছ কিনে রাখছি। বাজারে পিছফলের চাহিদা আছে অনেক। আশা করি ভাল ব্যবস্যা করতে পারবো এবার।
মন্তব্য ( ০)