• বিশেষ প্রতিবেদন

কুড়িগ্রামে ছিটমহল বিনিময়ের ৯ বছরে বদলে গেছে জীবনযাত্রা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০১ আগস্ট, ২০২৪ ১৯:০৬:২২

ছবিঃ সিএনআই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ ছিটমহল বিনিময়ের ৯ বছর পূর্তি আজ। ৯ বছরে দেশের উন্নয়নের ধারায় মিলেছে দীর্ঘ ৬৮ বছর বন্দিজীবন কাটানো মানুষেরা। যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, চাকুরীসহ সকল মৌলিক অধিকারে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন তারা। তাই প্রতি বছরের ন্যায় ছিটমহল বিনিময়ের দিনটিকে স্বরণীয় করে রাখতে পালন করে আসছেন নানা কর্মসূচীও। এদিকে দেশের অভ্যন্তরে থাকা সবচেয়ে বড় অধুনালুপ্ত ছিটবাসীদের ভাগ্য পরিবর্তনে নানা উন্নয়নের পাশাপাশি বিশেষ নজর রাখার কথা জানায় প্রশাসন। 

পাকা সড়ক, কমিউনিটি ক্লিনিক, ই-সেন্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, মসজিদ-মন্দির সবই শোভা পাচ্ছে অধুনালুপ্ত ছিটমহলে। সব সুবিধায় চাষাবাদ হচ্ছে ফসলী জমি। এই দৃশ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ার। এখানে বসবাসকারী প্রায় ১৫ হাজার মানুষের সকল মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে জীবন-মান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ার পাশাপাশি নানা কর্মসূচী নিয়েছে সরকার। বিলুপ্ত ছিটবাসীরা জানান, ছিট বিনিময়ের আগে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব থাকলেও যেতে পারতেন না নিজ দেশে। অন্যদিকে মিলতো না বাংলাদেশের  কোন সুবিধাও। এভাবে ৬৮ বছর বন্দিজীবন কাটানোর পর মুক্ত হয়েছেন তারা। আগে গোপনে লেখাপড়া ও কৃষিপণ্য আনা নেয়া করলেও এখন মিলছে সরকারি চাকরীসহ সকল সুবিধা। এতে খুশি তারা। তাই দীর্ঘ আন্দোলনের পর মুক্তি পাওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নানা কর্মসূচী পালনের কথা জানান ছিটবিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতারা।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটবিনিময় সমন্বয় কমিটির দাসিয়ার ছড়া ইউনিটের সাবেক সভাপতি মোঃ আলতাব হোসেন জানান ৬৮ বছরের বন্দীদসা থেকে মুক্ত হওয়ার দিন আজ। গত ৯ বছরে আমাদের ছিটমহল দাসীয়ার ছড়ায় যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তা আমরা জীবনেও ভাবিনী। আমাদের সকল মৌলিক অধিকার সহ শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎতের উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণসহ সর্বক্ষেত্রেই আশাতিত উন্নয়ন হয়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, বিগত ৯ বছরে অধুনালুপ্ত ছিটবাসীদের ভাগ্য বদলাতে সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে নির্মাণ করা হয়েছে ব্যাপক অবকাঠামো। আগামীতেও তাদের জীবন-মান উন্নয়নে কাজ করে যাবে সরকার। 

১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে (১২টা ১ মিনিটে) বিনিময় হয় বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১শ ৬২টি ছিটমহল। বাংলাদেশ পায় ১শ ১১টি আর ভারত পায় ৫১টি ছিটমহল। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় যুক্ত হয় ১২টি ছিটমহল। অবশিষ্ট ছিটমহলগুলো লালমনিরহাট ও পঞ্চগড় জেলায় অবস্থিত। 

ছিটমহল বিনিময়ের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশের সবচেয়ে বৃহত বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ায় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে আজ ১ আগস্ট দিনব্যাপী নানান কর্মসূচি পালন করা হবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo