
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতে ইসলামী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি আনোয়ার হাসান সুজন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ পরিচালিত হয় আইনের মাধমে। আইন ছাড়া কোন রাষ্ট্র চলতে পারে না। আর সর্বোচ্চ আইন হচ্ছে সংবিধান। বাংলাদেশ চলে সংবিধানের ভিত্তিতে। সংবিধানের কোন শূন্যতা যখন সৃষ্টি হবে তখনই একটা সংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশ বহুবার সাংবিধানিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ বর্তমানের একটি রাজনৈতিক ও আইনী জটিলতার মধ্য দিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। ৫ আগস্ট যখন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলো এবং পার্শ্ববর্তী একটি রাষ্ট্রে আশ্রয় নিলো। ৫-৮ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন সরকার ছিলো না। এখানে সাংবিধানিক কোন কর্তৃপক্ষ ছিলো না। এই সময়টি রাষ্ট্রের দেখাশোন ও আইন শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয়, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেখানে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দায়িত্বটি পালন করেছে। ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের কর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষরে প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, “ড. শফিকুর রহমান গুলশানের এক অনুষ্ঠানে প্রথম জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব পেশ করেন। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের নির্বাচনী ইতিহাসে ১২টি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে কেবল ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনই তুলনামূলকভাবে সুষ্ঠু হয়েছিল—যেগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। ভবিষ্যতে প্রশ্নবিদ্ধহীন নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচনী পদ্ধতিতে সংস্কার জরুরি। এ প্রেক্ষিতেই পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির প্রস্তাব করা হয়।”
মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, “বিভিন্ন জরিপে পিআর পদ্ধতির প্রতি জনগণের সমর্থন স্পষ্ট। বর্তমানে বিএনপি ৩৫% ভোট সমর্থন পায় ধরে নিলে বাকি ৬৫% সমর্থন রয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ২৬ দলের পেছনে। তাই এই জনসমর্থনকে আইনি রূপ দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কোনো বাধা নেই।”
সভায় ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়: ১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন। ২. উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু। ৩. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। ৪. গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার। ৫. ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আসাদুজ্জামান সোহেল, সহ-সেক্রেটারি মাহবুবুল হাসান শামীম, শূরা ও কর্মপরিষদের সদস্য খন্দকার আবু হানিফ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারী, সাংগঠনিক থানার আমীরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য (০)