• বিশেষ প্রতিবেদন

মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত সরিষা ফুলের মাঠ, স্বপ্নে বিভোর কৃষক

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২০ জানুয়ারী, ২০২৪ ১১:৫৬:৩৭

ছবিঃ সিএনআই

শিবচর, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাদারীপুর জেলার শিবচর ‍উপজেলার দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। সরিষার হলুদ ফুলের রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন ফসলের মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের স্বপ্নে বিভোর কৃষক।  তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে আনন্দের হাসি।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং সরিষার ভালো মূল্য পেলে এ অঞ্চলে সরিষা চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি পাবে ও ভালো দাম পেলে অনেক লাভবান হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চারপাশে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে এখন মুখরিত ফসলের মাঠ। হলদে রংয়ের সরষে ফুল প্রকৃতিকে করেছে অপরূপ। কাদিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সরিষার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলা সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৯টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সরিষা চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে। সরকারিভাবে উপজেলা ও পৌরসভায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের ৫ হাজার ৭০০ জনের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজসহ সার বিতরণ ও  প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরিষা চাষে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ও ফসলের প্রাকৃতিক দুর্যোগরোধে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রেখে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

উপজেলার কৃষক খোকন মিয়া জানান, এবার এক একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আসা করা যায় ফলন ভালো হবে। 

আরেক কৃষক মোহাম্মদ আজিজুল্লাহ জানান, আমি এক একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আশা করছি ফলন ভালো হবে। সরিষায় ধানের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও আবাদ করেছি।

চরজানাজাত এলাকার কৃষক আব্দুল করিম ফালু জানান, বর্ষা মৌসুমে পানির নিচে থাকে এ এলাকার জমিগুলো। তখন ধান চাষ করা যায় না। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রতিবারের মতো এবারও সরিষা চাষ করেছি। সরিষাতে এখন ফুল ফুটেছে। সরিষার ভাল ফলন দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সরিষায় চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।

মাদবরের চর এলাকার সরিষা চাষি বেল্লাল হোসেন জানান, এবার সরিষার ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। ২ বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছি। শুধু আমাদের নয়, আশেপাশের সকল চাষিদের ফসল ভাল দেখা যাচ্ছে। তবে, হাল চাষের খরচ বৃদ্ধি ও অন্যান্য খরচ বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত দাম নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। দাম ভাল হলে গত বারের চেয়ে লাভের অংক বেশি হতে পারে। সংশিষ্ট কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং সরিষার ভাল মূল্য পেলে এ অঞ্চলে সরিষা চাষের পরিধি আগামীতে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo