• বিশেষ প্রতিবেদন

নানা আয়োজন এবং বিনম্র শ্রদ্ধায় কমরেড অমল সেনকে স্মরণ

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১৬ জানুয়ারী, ২০২৪ ২৩:১১:৩২

ছবিঃ সিএনআই

নড়াইল প্রতিনিধিঃ ১৭ জানুয়ারি ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের পুরোধা,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক,বাংলাদেশের ওর্য়াকার্স পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড অমল সেনের ২১তম মৃত্যুবাষিকী।দিবসটি পালনে দ্বিধাবিভক্ত অমল সেন স্মৃতিরক্ষা কমিটি এবং বিপ্লবী কমিউনিষ্ট লীগ আজ ১৬ জানুয়ারি থেকে দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নেতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ,শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা,আলোচনা সভা,মেয়েদের বাইসাইকেল চালনা,সন্ধ্যায় দ্বীপশিখা প্রজ্জলন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।মঙ্গলবার বিকেলে বিপ্লবী কমিউনিষ্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ নেতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

পরে বাকড়ী বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন কংকণ পাঠক। প্রধান আলোচক ছিলেন কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ। বক্তব্য দেন,যশোর জেলা কমিটির সম্পাদক কমরেড তসলিমুর রহমান,জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড মোজাম্মেল হক,ক্ষেত মজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি গাজী নওশের আলী,সহকারি অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র  অধিকারী,বাঘারপাড়া উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিথিকা বিশ্বাস প্রমুখ।

বক্তারা বলেন,কমরেড অমল সেন ১৯১৪ সালের ১৯শে জুলাই নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া গ্রামের প্রখ্যাত রায় পরিবার মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নড়াইলের আফরার জমিদার পরিবারের সন্তান। নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বৃটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী,অনুশীলন’ গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত হন।

খুলনা দৌলতপুর বিএল কলেজে গনিতশাস্ত্রে অনার্স অধ্যয়নরত অবস্থায় মার্কসবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধহন এবং নড়াইলে ফিরে এসে কৃষক আন্দোলন করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। পিতার জমিদারী,  অর্থ সম্পত্তি বিত্তবৈভব তাঁকে কখনো আকৃষ্ট করতে পারেনি। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন মানব জীবনের সর্বোচ্চ  প্রাপ্তি হতে পারে মানব সমাজের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা তথা শ্রমজীবী মানুষের শোষণ মুক্তির লড়াইতে অংশ গ্রহণ করা। তিনি সারাজীবন নিজেকে এ সংগ্রামে নিয়োজিত রাখেন। পাকিস্তান শাসনামলের ২৪ বছরের মধ্যে ১৯ বছরই তাঁকে কারান্তরালে কাটাতে হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৭মার্চ মুক্তিকামী জনতা তাঁকে যশোর কারাগার ভেঙ্গে মুক্ত করে। এরপর স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পরে তিনি কয়েকটি বামপন্থী দলকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন করেন এবং এই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন।  

২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে অকৃতদার এই বিপ্লবী নেতা  মৃত্যুবরণ করেন। মহান এই বিপ্লবীর মৃত্যুতে, স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অবদানের জন্য  নড়াইল জেলা পরিষদ ডাকবাংলো চত্বরে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়। যৌবনে বাড়ী ছেড়ে তিনি নড়াইল-যশোর জেলার সীমান্তবর্তী যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ী গ্রামের এক কৃষক পরিবারে আশ্রয় নেন।  

মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ও ভারতের  অসংখ্য অনুসারী ও ভ্রাতৃপ্রতিম পার্টির নেতা কর্মীদের  উপস্থিতিতে তাকে নড়াইল এবং যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে সমাহিত করা হয়। সমাধিস্থলে প্রতি বছর ১৭ ও ১৮ জানুয়ারী অমল সেন মেলা অনুষ্টিত হয় যেখানে দেশের বামপন্থী রাজনীতির নেতা কর্মীরা মিলিত হন।  সেখানে আলোচনা অনুষ্ঠান,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীনমেলার আয়োজন করা হয়।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo