ছবিঃ সিএনআই
গাজীপুর প্রতিনিধি : তিন দশকের শিক্ষকতা শেষে বিদায় নিলেন বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ. কে. এম মুজিবুর রহমান।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বরাইয়া গ্রামের সকালটা ছিল অন্যরকম। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালবেলা গ্রামের পুরনো বিদ্যালয়ের আঙিনায় এক আবেগঘন পরিবেশ। চোখ ভেজা শিক্ষার্থী, অভিভাবক আর সহকর্মীদের ভালোবাসায় বিদায় নিলেন এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ. কে. এম. মুজিবুর রহমান (৫৯)।
১৯৬৬ সালের ৩১ অক্টোবর এই বরাইয়া গ্রামেই জন্ম তাঁর। আর এই অক্টোবর মাসেই শেষ হলো তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবন। যেন জীবনের শুরু আর শেষ এক অভিন্ন সময়ে এসে মিলে গেলো। বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শুরু হয়েছিল তাঁর শিক্ষাজীবন। সেই বিদ্যালয়েই আবার শিক্ষকতার শেষ দিনটি কাটালেন তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে শিক্ষকতা জীবনের শেষ পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ই যেন তাঁর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে পরিসংখ্যান বিষয়ে (সম্মান) স্নাতক এবং ১৯৯০ সালে একই বিষয়ে এম.এসসি সম্পন্ন করেন মুজিবুর রহমান। শিক্ষাজীবন শেষ করে সরকারি চাকরির বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও তা ফিরিয়ে দেন। বাবা ও পরিবারের ইচ্ছা ছিল সরকারী চাকুরীতে যোগদান। তবে সবার অনুরোধ উপক্ষো করে নিজের ইচ্ছায় কর্মজীবন হিসেবে শিক্ষকতা দিয়ে শুরু করেন এবং শেষও হয়।” সেই ইচ্ছার মর্যাদা রেখেছিলেন তিনি।
১৯৯৫ সালের ১২ জুন তিনি পুনসহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পাঁচ বছর ছয় মাস সেখানকার শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর পর দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন, সেখানে কাটান আরও দুই বছর।
২০০৪ সালের ২৭ এপ্রিল যোগ দেন তাঁর শৈশবের বিদ্যালয় বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপরের ২২টি বছর কাটে এই বিদ্যালয়ে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় ভরপুর হয়ে।
বিদায়ী সংবর্ধনায় অংশ নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ. টি. এম. কামরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও সাংবাদিক তৈয়বুর রহমান।
অনুষ্ঠান শেষে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রীতে ভরে ওঠে প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের হাত। পরম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তাঁকে বিদ্যালয় থেকে সুসজ্জিত গাড়িতে করে নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।
তাঁর তিন দশকের শিক্ষকতা জীবনে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিক্ষার্থী, যারা এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। তাঁদের কাছে শিক্ষক মুজিবুর রহমান কেবল শিক্ষক নন, বরং এক জীবন্ত প্রেরণা, এক আলোকিত মানুষ।
যে মাসে জন্ম, সে মাসেই বিদায় এ যেন এক জীবনের পরিপূর্ণতা। তিন দশকের শিক্ষাসেবা শেষে শান্ত, গর্বিত মুখে অবসরে গেলেন এ. কে. এম. মুজিবুর রহমান। রেখে গেলেন ভালোবাসায় ভরা একটি প্রজন্ম, যাদের মুখে আজও উচ্চারিত হয় স্যার, আপনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন আমাদের অনুপ্রেরণায় চিরদিন।
জামালপুর প্রতিনিধি : আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামা...
নড়াইল প্রতিনিধি : সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়” এই প্...
মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে চলমান ...
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী জংশন ও বাইপাস রেল স্টেশনে ব...
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্টাত...

মন্তব্য (০)