রংপুর ব্যুরোঃ রংপুরের বদরগঞ্জে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।ঘটনাটি উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের খোড়াজান এলাকায় ঘটেছে।এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর মা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।
শনিবার(২১ ডিসেম্বর)সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়,৭ ডিসেম্বর ওই শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মা স্থানীয় এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মেয়েকে। ওই শিক্ষার্থীর শারীরিক পরিবর্তনে চিকিৎসকের সন্দেহ হলে তিনি চিকিৎসা না দিয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন।চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান তিনি।সেখানকার চিকিৎসকরা মেয়েটির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেন।পরে স্থানীয় একটি বেসরকারি প্যাথলজিতে মেয়েটির আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়।
এরপর আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট হাতে পেয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন মেয়েটি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির মা বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েন এবং সঙ্গে থাকা কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে বাড়িতে ফিরে যান।এরপর মেয়েকে নানাভাবে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, সাত মাস আগে বাড়ির পাশে খেলার সময় তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান আব্দুল মান্নানের ছেলে প্রতিবেশী জ্যাঠা সাদিকুল ইসলাম।বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সাদিকুল ইসলাম জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্য তাকে কঠোরভাবে শাসানো হয়ে। কঠোরভাবে শাসানোর কারণে প্রাণভয়ে মেয়েটি কাউকে কিছু বলতে পারেনি।
ওই স্কুল শিক্ষার্থীর মা আরও বলেন, মেয়ের কাছ থেকে সবকিছু জানার পর সাদিকুলের বাড়িতে যাই এবং তার কাছে জানতে চাই। লম্পট সাদিকুল সবকিছু স্বীকার করলেও বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে নানা ধরনের হুমকি দেন। পরে সাদিকুলের চাচা আনসার আলীর কাছে যান এবং ঘটনা খুলে বলেন।
তিনিও বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলেন,টাকা-পয়সা নিয়ে মেয়েটির গর্ভের সন্তান নষ্ট করার পরামর্শ দেন। এ নিয়ে এলাকার মনসুর আলী ওরফে ভোদাই মেম্বারের বাড়িতে কয়েক দফায় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ভুক্তভোগীর মাকে ৭ লাখ টাকা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলা হয়।পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং স্থানীয় মাতব্বরদের সেই প্রচেষ্টা বিফলে যায়।পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভুক্তভোগীর মা-সাদিকুলকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ দিলে আমরা মামলা হিসেবে গ্রহণ করি। তবে মামলা হওয়ার আগে থেকেই সাদিকুল গা ঢাকা দেয়ায় তাকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।তাকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।অতিদ্রুত আসামীকে গ্রেফতার করা হবে।
মন্তব্য ( ০)