• সমগ্র বাংলা

বিজয় দিবসে জেলা প্রশাসকের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলায় ছাত্রদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ডিসি’র ব্যাখ্যা

  • সমগ্র বাংলা
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৬:৪১:৫৬

ছবিঃ সিএনআই

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিছ আলীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ও গ্রেফতারের জন্য আলটিমেটাম প্রদান করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত বুধবার এই মানববন্ধনে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে প্রত্যাহারের দাবী তোলা হয়। ঐ দিন রাতে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একটি আলোচনা হয়। আলোচনার প্রেক্ষিতে আজ জেলা প্রশাসক একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রদান করে সাংবাদিকদের।

উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন “গত ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস- ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোই ছিল এ আয়োজনের মুখ্য উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যে যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ বিভিন্ন উপ-কমিটির মাধ্যমে প্রস্তুতিমূলক সভা করে। উপ-কমিটির এসব সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শ ও দিক-নিদের্শনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ আলোকেই মঞ্চে আসনবিন্যাসসহ বক্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার হীন উদ্দেশ্য থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব ইদ্রিস আলী ভূইয়া কিছু শব্দচয়ন করেন যা জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ কোনভাবেই সমর্থন করে না। এটি তার একান্তই নিজস্ব বক্তব্য এবং জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ এই বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছে। তার বক্তব্যের বিষয়টি পর্যালোচনা কর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী বীর শহীদ, আহত ও অংশগ্রহণকারী জাতির অকুতোভয় সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করছে।”

উল্লেখ্য, বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। সেখানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী বলেন, ৭১ আর ২৪-এর আগস্ট এক নয়। একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। আর ৫ আগস্ট ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন। কিন্তু আবু সাঈদ কোন আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন? চব্বিশের আন্দোলনে তারা শহীদ হয়েছিলেন। আন্দোলন সফল হয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারা শাসন করবেন, আপত্তি নেই। পরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন ও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের জেলা সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন, অভি চৌধুরী, আফসানা আক্তার মিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জুয়েল আহমেদ, শওকত কবীর খোকন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ইদ্রিছ আলী কী করে শহীদ আবু সাঈদ সম্পর্কে এমন বক্তব্য এবং বিতর্কিত স্লোগান দিলেন। জেলা প্রশাসককে এর জবাব দিতে হবে। তারা জেলা প্রশাসককে ফ্যাসিবাদের দোসর বলে আখ্যায়িত করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইদ্রিছ আলীকে গ্রেপ্তার ও জেলা প্রশাসকের প্রত্যাহার দাবি করেন। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান উপরোল্লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

কিশোরগঞ্জে বাচ্চুর হত্যার প্রতিবাদে তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান মোঃ আশরাফ আলী, কিশোরগঞ্জ: গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার মাঠে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মাওলানা সাদপন্থী ও মাওলানা যুবায়ের পন্থীদের সংঘর্ষে নিহত আমিনুল হক বাচ্চুসহ অন্যান্যদের হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে কিশোরগঞ্জে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার ব্যানারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জহুর নামাজের পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদ প্রাঙ্গনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মার্কাজ মসজিদে গিয়ে শেষ হয়। নিহত আমিনুল হক বাচ্চু কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্ধুর গ্রামের বাসিন্দা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং অবিলম্বে সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ করার জোর দাবী জানান। মিছিল শেষে কিশোরগঞ্জ জেলা ইমাম-উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা শফীকুর রহমান জালালাবাদী স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে প্রদান করেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo