শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে এইচ ডি এফ এ্যাপারেলস নামক একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে জৈনা বাজার-কাওরাইদ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের জৈনা বাজার এলাকার এইচ ডি এফ এ্যাপারেলস নামক একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা জৈনা বাজার কাওরাইদ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে।
বেতনভাতা পরিশোধ না করে হঠাৎ করে কারখানা কতৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। এসময় গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এইচ ডি এফ এ্যাপারেলস কারখানার নারী শ্রমিক সম্পা সাহা বলেন, গত অক্টোবর ও চলতি মাসের বেতন বকেয়া পাওনা আমরা। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের বেতন পরিশোধ না করে হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ করে নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে । সকালে কর্মস্থলে এসে দেখি কারখানার মূল ফটকে কারখানা অনিষ্টকালের জন্য বন্ধ নোটিশ । কারখানা কর্তৃপক্ষ গত নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধের তারিখ অনেক আগেই চলে গেছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ না করে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সবাই পালিয়ে গেছে।
কারখানার শ্রমিক রিনা আক্তার বলেন, শুধুমাত্র মরিচ দিয়ে ভাত নিয়ে এসেছি। আমরা খুবই কষ্টে আছি। শুধু মরিচ দিয়ে ভাত নিয়ে এসেছি দেয় দিচ্ছি করে আমাদের দেড়মাস যাবৎ ঘুরাচ্ছে। আমরা দেড়মাস বেতন না পেলে কিভাবে চলি। আমাদের দোকানী একমাসের বেশি বাকি দেয় না। মাস শেষে বাড়ির মালিক বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দেয়। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে এজন্য রাস্তায় নেমে এসেছি।
একই কারখানার শ্রমিক মনি বলেন, দেয় দিচ্ছি করে আমাদের শুধু ঘুরাচ্ছে দেড়মাস যাবত। বেতন তো পরিশোধ করেনি। শ্রমিকদের না জানিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ। কি করবো পেট তো আর দেয় দিচ্ছি আজ না কাল শুনে না। পেটের দায়ে রাস্তায় নেমেছি। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বো না। কপালে যা আছে তাই হবে।
একই কারখানার শ্রমিক আল-আমীন বলেন, বেতনের তারিখ শেষ হতে না হতেই বাড়ির মালিক ভাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আর দোকানি বাকি পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। সামান্য কষ্টের কারণে রাস্তায় আসেনি। এমন রোদে আপনারা তো থাকতে পারেন না। কিন্তু আপনার ঘন্টাব্যাপী আছি কি ভাবে। পেট তো আর কষ্ট বুঝে না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ মাসশেষে দিতে হয়। শ্রমিকদের কষ্ট কেউ বুঝে না।
এইচ ডি এফ এ্যাপারেলস কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা প্রিন্স মাহমুদ এর ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে শিপু নামের এক কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকরা যাতে ভাংচুর করতে না পারে সে জন্য গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।তবে কয়েকদিনের মধ্যে বেতনবাতা পরিশোধ করে দেওয়া হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।
মন্তব্য ( ০)