• বিশেষ প্রতিবেদন

ঠাকুরগাঁওয়ে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে পিঁড়িতে বসে চুল কাটা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৩:৩৭:১৪

ছবিঃ সিএনআই

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ চুল ও দাড়ি কেটে মানুষ‌কে আকর্ষনীয় সুন্দর করাই যাদের পেশা তারাই হলেন নরসুন্দর। ত‌বে তা‌দের‌কে নরসুন্দর হিসা‌বে সবাই না চিন‌লেও নাপিত হিসাবে কিন্তু চি‌নে। মানুষ স্বভাবগত সুন্দরের পূজারী আর মানুষের চুল-দাড়িই তার সৌন্দর্য বহন করে এমন‌কি তার ব্যক্তিত্বও ফু‌টি‌য়ে তো‌লে।

সৌন্দর্য বর্ধনে নরসুন্দরদের কদর ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একটা সময় হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জে কাঠের পিঁড়ি বা খাটিয়ায় বসে নরসুন্দরেরা হাঁটুর নিচে মাথা পেতে মানুষ চুল, দাড়ি কাটতো। কা‌লের বিবর্তনে ও মানু‌ষের অর্থনৈ‌তিক অবস্থা ও রুচির প‌রিবর্তনের ফ‌লে পিঁড়িতে বসে চুল কাটা দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। ত‌বে এখনও দুএক‌টি হাট-বাজারে পিঁড়িতে বসে নরসুন্দরেরা হাঁটুর নিচে মাথা পেতে মানুষের চুল, দাড়ি কাঁটছে এমন দৃশ‌্য চো‌খে প‌ড়ে।

য‌দিও যুগ যুগ ধরে চলে আসা গ্রামীণ এই ঐতিহ্য বিলু‌প্তির প্রধান কারণ হ‌লো আধুনিক সভ্যতার ছোয়। সেই ছোয়ায় দৈনন্দিন জীবনে এসেছে পরিবর্তন, লেগেছে নতুনত্বের ছোয়া, গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক মানের সেলুন, জেন্টস পার্লার।

ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লীর হাট বাজারে এখনও চোখে পড়ে চিরচেনা সেই দৃশ্য। খরচের কথা মাথায় রেখে নিম্ন আয়ের মানুষ এখানে চুল-দাড়ি কাটান।

নরসুন্দর রতন কুমার বলেন,ঠাকুরগাঁও ভুল্লীতে সপ্তাহে ২ দিন বসি এবং ভ্রাম্যমাণভা‌বে হা‌টে ২ দিন এই কাজ করি। ১৫-২০ বছর আগে চুল-দাড়ি কাটা ৪-৫ টাকা ছিল, সে সময় যা আয় হতো তা দিয়ে ভা‌লো ভা‌বেই সংসার চলতো। কিন্তু বর্তমানে চুল কাটতে ২৫-৩০ টাকা এবং দাড়ি কাট‌তে ১৫-২০ টাকা নেই। ত‌বে এত কমদামে চুল দা‌ড়ি কাটার পড়ও গ্রাহক পাওয়া দুস্কর হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। সারাদিনে ৩০০-৩৫০ টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালানো ক‌ঠিন হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। দীর্ঘ প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে এই পেশায় নিয়োজিত আছি তাই ছাড়‌তেও পারছি না আবার ভা‌লোভা‌বে কর‌তেও পারছি না।

এ সকল না‌পি‌তের কা‌ছে চুল কাটাতে আসা সালাম, জাহিদ ও সোহাগ জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এখা‌নে চুল কাটাই। য‌দিও বর্তমানে অনেক আধুনিক সেলুন আছে কিন্তু ওখানে চুল কাটা আমা‌দের সাধ ও সা‌ধ্যের বা‌হি‌রে, তাই সাশ্রয়ী এই সব না‌পি‌তের কা‌ছেই চুল কাট‌তে আসি।

ভুল্লী বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ভুট্টু চৌধুরী জানান, কালের বিবর্তনে পিঁড়িতে বসে চুল কাটার দৃশ্য তেমন একটা চোখে পড়ে না, তবে একটা সময় ছিল বাবার হাত ধরে পিঁড়িতে বসে চুল কাটাতে যেতাম। বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়ায় শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে সেলুন গড়ে উঠেছে। অধিকাংশ মানুষ এখন সেইসব সেলুনেই চুল কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo