গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর রেল স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস সহ সকল আন্ত:নগর ট্রেনের (আপ-ডাউন) যাত্রা বিরতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শ্রীপুরবাসী। সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১ টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীপুর রেল স্টেশনে আটক করে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। নববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, আইনজীবি, সাংবাদিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে। দুই ঘন্টা পর দুপুর সোয়া ১ টায় আন্ত:নগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্ধেশ্যে শ্রীপুর রেল স্টেশন ছেড়ে যায়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শ্রীপুর এস আরটির সদস্য জুবায়ের হোসেন বলেন, শ্রীপুর রেল স্টেশনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ষ্টেশন। ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথের আগমন উপলক্ষ্যে এ ষ্টেশনের সুনাম রয়েছে বাংলাদেশ রেল বিভাগে।
দীর্ঘদিন যাবত শ্রীপুরের সর্বস্তরের জনতা জেলা শহর গাজীপুর এবং রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস সহ সকল আন্ত:নগর ট্র্রেনের যাত্রা বিরতির জন্য দাবী জানিয়ে আসছে। কর্তৃপক্ষের বারবার আশ্বাস দিলেও কোন সুরাহা করছে না। তাই এ ষ্টেশনে আন্ত:নগর ট্রেনের বিরতি হোক এটাই শ্রীপুর বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ বলেন, আমরা ব্যবসায়ী এবং আইনজীবিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ দীর্ঘদিন যাবত শ্রীপুর রেল স্টেশনে সব আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবি জানিয়ে আসছি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের যৌক্তিক দাবির মেনে নিচ্ছে না। তাই সকলকে নিয়ে ঢাকাগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছি।
দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমারা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাব। মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিদিন শ্রীপুর ষ্টেশন থেকে জেলা শহর গাজীপুর এবং রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন কাজে সকল শ্রেণী পেশার লোকজন যাতায়াত করে থাকে। জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রী, আইনজীবি যাতায়াত করে। এ ষ্টেশনে আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি হলে যাত্রীদের যেমন সময় অপচয় কম হবে তেমনি সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে। সবদিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রæত সময়ের মধ্যে শ্রীপুর বাসীর দাবী মেনে নেবে বলে আশা করি। শ্রীপুর বাজারের অপর ব্যবসায়ী শ্রী তপন কুমার বণিক বলেন, শ্রীপুর রেল ষ্টেশনের আন্ত:নগর ট্রেনের (আপ-ডাউন) যাত্রা বিরতির দাবি নাগরকিদের অধিকার।
এই ষ্টেশনে আন্ত:নগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের দীর্ঘদিন যাত্রা বিরতি চলছে। শিল্প কারখানা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় আমার জানামতে বিগত দিনে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে রাজস্ব আদায় ছিল লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে দিগুণেরও বেশি। ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রা বিরতি থাকলে শ্রীপুর ষ্টেশন থেকে রেলওয়ে খাতে মাসিক রাজস্ব আয় অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। শ্রীপুর রেলওয়ে ষ্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, ছাত্র সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে একটি কমিটি হবে। ওই কমিটি রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করবে। রক্ষনাবেক্ষন পদ্ধতি প্রয়োগ (লিগ্যাল প্রসিডিউর মেন্টেন) করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দুপুর সোয়া ১ টায় শ্রীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ জানান, আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। সেখান থেকেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। শ্রীপুরবাসীর দাবির বিষয়টি বিবেচনাধীন। ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসসহ সকল আন্ত:নগর ট্রেনের (আপ-ডাউন) যাত্রা বিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য ( ০)