• রাজনীতি

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে আগামীকাল

  • রাজনীতি
  • ২৫ জুন, ২০২৪ ১৭:২৭:২৫

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামীকাল বুধবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। তবে কী ধরণের কর্মসূচি দেওয়া হবে তা এখনও জানানো হয়নি। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই লক্ষে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবদান, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ সাম্প্রতিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে অতুলনীয়। খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষে এই হীন চক্রান্ত করছে অবৈধ সরকার। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং সংবিধানবিরোধী। এই মামলায় জামিন পাওয়া তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। 

খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চিকিৎসকেরা তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। এমন কি পরিবারের পক্ষ থেকে দুই বার তাঁর বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে তাঁকে হত্যার উদ্দেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেছেন। তিনি ভারতের সঙ্গে ২টি চুক্তি ৫টি নতুন সমঝোতা স্বারক ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করছি। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের কোনো চুক্তি না করা, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বন্ধ না করা, একতরফাভাবে ভারতকে সকল সুবিধা প্রদান করে বাংলাদেশের স্বার্থ ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগিতা, ওষুধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ এবং ভারতের ইনস্পেস ও বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, রেলমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্রবিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের সমঝোতা ইত্যাদি সমঝোতাগুলোতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ভারতকে সব সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে থেকে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এবং এটা ম্যান্ডেট বিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বহিঃপ্রকাশ। 

এই অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেছে। এই চুক্তিগুলোকে বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত সংবাদ সম্মেলন আগামী ২৮ জুন (শুক্রবার) বিকেল ৩টা অনুষ্ঠিত হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। কিশোরগঞ্জে হাওরের মাঝখানে সড়ক নির্মাণ এবং বেশ কিছু এলাকায় মাটি ভরাট করে কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণ করায় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশিত না হওয়ায় এ ভয়াবহ দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরসহ বিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির তলে যাওয়ায় অসংখ্য মানুষ সীমাহীন দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারের কোনো ত্রাণ তৎপরতা দেখা যায়নি। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য সভায় দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির একটি ত্রাণ টিম অতিদ্রুত সিলেট সফর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo