
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরের প্রত্যন্ত অঞ্চল মিরাট ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের বিল মুনছুরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা হরিশপুর-মিরাট-নয়াহরিশপুর রাস্তাটি আজোও অবহেলিত। জামালগঞ্জ বাজার থেকে শৈলগাছী পর্যন্ত প্রায় ৬কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে হরিশপুর-মিরাট-নয়াহরিশপুর ৪কিলোমিটার রাস্তা এখনো মাটির।
যুগের পর যুগ এলাকার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে লাল মাটির এই গ্রামীণ মেঠো রাস্তাটি। বর্ষা মৌসুমে লাগাতার বৃষ্টি রাস্তায় জমে থাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় যা শুষ্ক মৌসুমে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। যে গর্তগুলো মেরামত না করে চলাচল করা খুবই দুরুহ। তাই শুক্রবার নিজেদের চলাচলের সুবিধার্থে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে খানাখন্দকে ভরা মেঠো রাস্তাটি মেরামত করেছে মিরাট অঞ্চলের অটোচার্জার ভ্যান চালকরা। এতে করে চলাচলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে পথচারীদের মাঝে।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জামালগঞ্জ বাজার থেকে মিরাটের বিল মুনছুরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে পার্শ্ববতী সদর উপজেলার শৈলগাছী পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা। রাস্তাটির কিছু অংশ পাকা আবার কিছু অংশ ইট বিছানো। এর মধ্যে হরিশপুর-মিরাট-নয়াহরিশপুর ৪ কিলোমিটার রাস্তা মাটির। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা দিয়ে চলাচলা করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তায় পানি ও কাঁদায় একাকার হয়ে যায়। রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় কাঁচা মাটির রাস্তা দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার কয়েকটি গ্রামের কৃষক, ভ্যানচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষদের। প্রতিদিন এলাকার হাজারো মানুষ এই রাস্তা দিয়ে রাণীনগর উপজেলা, নওগাঁ, রাজশাহীর বাগমারাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন বিলের মধ্যে অবস্থিত গ্রামের শিক্ষার্থীদের মিরাট উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি।
স্থানীয় অটোচার্জার ভ্যান চালক ইদ্রিস আলী বলেন রাস্তাটি লাল মাটির হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই কাঁদার তৈরি হয় ফলে চলাচলের সময় পথচারীসহ চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে কাঁদার সঙ্গে লুটোপুটি খেতে হয়। বিশেষ করে স্কুলগামী ও জরুরী রোগীদের পড়তে হয় চরম বেকায়দায়। এছাড়া বড় বড় ঢেউয়ের মতো উচু-নিচু গর্তগুলো মেরামত না করলে যাত্রীসহ ছোট ছোট চার্জার ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন উল্টে যায়। রাস্তা খারাপ হওয়াই যাত্রীরাও উঠতে চায় না। তাই বাধ্য হয়েই নিজেরা রাস্তাটি মেরামত করছেন। এমন দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে এই লাল মাটির গ্রামীণ রাস্তাটি পাঁকাকরণ বর্তমানে সময়ের দাবী।
স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল সরকার জানান শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে হাটু কাঁদা ভেঙ্গে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষকে চলাচল করতে হয়। রাস্তাটি খারাপ হওয়ার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। বর্ষা মৌসুমে বিকল্প রাস্তা হিসেবে অন্য ৩০কিলোমিটারের রাস্তা ঘুরে চলাচল করতে হয়। জরুরী রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্য বরণ করতে হচ্ছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সময় মতো বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। একটি রাস্তার জন্য এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন থমকে আছে। তাই দ্রুত এই পুরো রাস্তায় আধুনিকতার ছোঁয়া চায় এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ওই রাস্তার যতটুকু পাকা আছে সেটুকু সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়েছে। আর মাটির যে রাস্তা আছে সেটা পাকাকরণের জন্য ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র প্রেরণ করেছি। অনুমোদন হলে রাস্তাটি পাকাকরণ করা হবে।
মন্তব্য (০)