• অর্থনীতি

‎শ্রম আইন সংস্কারে বাস্তবভিত্তিক ও মাঠপর্যায়ের চিত্র বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান মালিকদের

  • অর্থনীতি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শ্রম আইন সংস্কারে বাস্তবভিত্তিক ও মাঠপর্যায়ের চিত্র বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)। দেশের প্রধান খাতভিত্তিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে একত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অনুযায়ী শ্রমমান ও শ্রমিকদের অধিকার জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বিইএফ বলেছে, ‘মালিকরা জোর দিচ্ছে যে, সংস্কার অবশ্যই বাংলাদেশের বাস্তবতা, শিল্পখাতের প্রেক্ষাপট এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ভিত্তিতে হতে হবে। কোনো আরোপিত বাহ্যিক চাপের ভিত্তিতে হলে তা বাস্তবায়ন কঠিন হবে।’ বৃহস্পতিবার বিইএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

‎এতে বলা হয়, গত দুই দশকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সরকার বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধন করেছে। সাম্প্রতিক আলোচনায় আইএলও ও ইইউ রোডম্যাপের অধীনে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের ৯০ শতাংশেরও বেশি বিষয়ে অংশীজনরা (সরকার, শ্রমিক ও মালিক) ঐকমত্য হয়েছে। কিন্তু শ্রম আইন বারবার পরিবর্তনের ফলে মাঠপর্যায়ে এর কার্যকারিতা যাচাইয়ের সুযোগ খুবই সীমিত হয়েছে। মালিকরা মনে করিয়ে দেন যে, সংস্কার কার্যকর করতে হলে তা বাস্তবসম্মত, জাতীয়ভাবে গৃহীত এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগযোগ্য হতে হবে।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হলো, অংশীজনরা ত্রিপক্ষীয়ভাবে একমত হওয়ার পরও নতুন সুপারিশ আনা হয়েছে। যার ফলে শ্রমবাজারের মূল অংশীজন মালিক ও শ্রমিককে প্রায় পাশ কাটানো হচ্ছে। এর বড় একটি উদাহরণ হলো- প্রতিষ্ঠানের আকার যাই হোক না কেন মাত্র ২০ জন শ্রমিককে নিয়ে ইউনিয়ন গঠনের প্রস্তাব। এই একমুখী বিধানের প্রস্তাব শিল্পখাতের বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে করা হয়েছে বলে আমাদের বিশ্বাস। এই প্রস্তাব শিল্পের বাইরের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি, কর্মক্ষেত্রের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করতে পারে। প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন শক্তিশালী করার পরিবর্তে এ ধরনের উদ্যোগ কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত শ্রমিক ও মালিক উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। উল্লেখ্য যে, শ্রমিকদের কেউ কেউ এই প্রস্তাব নিয়ে তাদের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন; কারণ এটি তাদের প্রকৃত চাহিদা নিরাপত্তা, কল্যাণ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও টেকসই জীবিকার সমাধান করে না।

‎এতে আরও বলা হয়, কেবল কাগজে আইন পাস করা নয়; বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হলো- প্রতিষ্ঠান ও শ্রমশক্তির সেই আইন কার্যকর করার সক্ষমতা নিশ্চিত করা। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানের সম্পদের ঘাটতি, দুর্বল শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থা এবং অকার্যকর তদারকি ও বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় সক্ষমতার অভাব। যদি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিদর্শন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং সামাজিক অংশীজনদের মধ্যে আস্থা গড়ে তোলায় সমান্তরালভাবে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তবে শ্রম আইনের নতুন সংশোধনী বাস্তবে কোনো সুফল দেবে না। শ্রমবাজারে জরুরি প্রয়োজন হলো সক্ষমতা বৃদ্ধি- শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নতুন শিল্প বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন ও পুনঃদক্ষকরণ; একই সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; যাতে তারা আইন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পারেন। এই মৌলিক বিষয়গুলো সমাধান ছাড়া বারবার আইনি কঠোরতা আরোপ কেবল শিল্পখাতে অনিশ্চয়তা বাড়াবে, বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে এবং শ্রমবাজারে বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।

‎বিজ্ঞপ্তিতে মালিকরা আইএলও ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন ত্রিপক্ষীয়তার নীতি বজায় রাখেন এবং ভবিষ্যতে তাদের যেকোনো পর্যবেক্ষণ সরকার, শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে স্বচ্ছ আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। একই সঙ্গে এই প্রক্রিয়াকে বাস্তবসম্মত, ভারসাম্যপূর্ণ ও পরামর্শভিত্তিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়, যাতে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত হয়, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বজায় থাকে এবং শ্রম অধিকার এমনভাবে উন্নত হয় যেন তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় টেকসই হয়। মালিকরা সতর্ক করে বলেন, অবাস্তব সংশোধনী হয়তো সাময়িকভাবে কিছু বাহ্যিক মহলকে সন্তুষ্ট করতে পারে, কিন্তু শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি টেকসইযোগ্যতা, শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা এবং লাখ লাখ শ্রমিকের জীবিকার নিরাপত্তাকে এর খেসারত দিতে হতে পারে।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বিইএফ জানিয়েছে, সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারর্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারর্স এসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশন (বিটিএ), লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স্ অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি), বাংলাদেশ জুট স্পিনারর্স এসোসিয়েশন (বিজেএসএ), বাংলাদেশ জুট মিলস্ এসোসিয়েশন (বিজেএমএ), বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি (বিএপিআই), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (ব্যাকো) এবং বাংলাদেশ অ্যাগ্র-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সহমতে তৈরি করা হয়েছে।

মন্তব্য (০)





image

এডিবির প্রতিবেদন এশিয়ায় খেলাপি ঋণে শীর্ষে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ এখন এশিয়ার সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণের দেশে পরিণত হয়েছ...

image

‎আওয়ামীলীগ আমলে লুটের জন্য দখল করা হয় যেসব ব্যাংক

নিউজ ডেস্কঃ ব্যাংক খাতে জালিয়াতির মাধ্যমে বিতরণ করা বড় অঙ্কে...

image

‎দেশে সেপ্টেম্বরের ৩ দিনে এসেছে ৩৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

নিউজ ডেস্কঃ চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে দেশে ৩৪ কোটি ৩০ লাখ মার...

image

সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় আজিজ খান

নিউজ ডেস্ক : সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ জন ধনীর তালিকায় এবারও স্থান পেয়েছেন মু...

image

ডিম-পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ আমদানির বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

নিউজ ডেস্ক : এক ডজন ডিমের দাম ১৫০ টাকা ছাড়ালেই আমদানির অনুমতি দেওয়ার পাশ...

  • company_logo