• শিক্ষা

পরিচালকের পদবি না পাওয়ায় পবিপ্রবি শিক্ষকের হতাশা, তালাবদ্ধ অফিসকক্ষ নিয়ে বিতর্ক

  • শিক্ষা

ছবিঃ সংগৃহীত

পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালকের পদবি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পরিচালকের অফিসকক্ষে তালাবদ্ধ থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ সংকট। সংকটের কেন্দ্রবিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এবিএম সাইফুল ইসলামের পরিচালকের পদবি না পাওয়া। ইতোমধ্যে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনো কোনো সমাধান আসেনি। কার্যালয়ের চাবি না থাকায় নিজের বিভাগীয় কক্ষেই শাখা পরিচালকের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন নবনিযুক্ত ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক।

জানা যায়, গত ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে ছাত্র উপদেষ্টা (বর্তমান পদবি—ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক) পদটি শূন্য হয়। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পরপরই ছাত্র উপদেষ্টা হতে আগ্রহী হন এবিএম সাইফুল ইসলাম। যদিও ক্যানসার আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকাকালে ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারের ওপর অর্পণ করেছিলেন। নিয়োগের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অধ্যাপক সুজাহাঙ্গীর ভারপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

ড. জিল্লুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্র উপদেষ্টার বাইরেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে দুটি পদই শূন্য হয়। পরবর্তীতে গত ৪ আগস্ট (সোমবার) ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. সুজাহাঙ্গীরকে এবং রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য পদে বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ছাত্র উপদেষ্টা হওয়ার অভিপ্রায়ে পরিচালক নিয়োগের কিছুদিন আগে ড. সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ব্যতীত ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো নিয়ে মিটিং আহ্বান করেন। পরবর্তীতে এই মিটিং আহ্বান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সেটি একবার স্থগিতও করা হয়। এরপরও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালকের পদবি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তৎকালীন ছাত্র উপ-উপদেষ্টা ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করলেও তিনি ছাত্র পরামর্শ ও  নির্দেশনা পরিচালকের কার্যালয়ে নিজস্ব একটি তালা ঝুলিয়ে রেখে যান। তাঁকে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি জানান, প্রয়াত অধ্যাপক জিল্লুর রহমানের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কার্যালয়ে থাকার কারণে তালা লাগিয়েছেন।

পরবর্তীতে ড. সাইফুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিওতে দাবি করেন, তাঁকে না দিয়ে তার জুনিয়র একজন শিক্ষককে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। অথচ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট নথি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ড. সাইফুল ও ড. সুজাহাঙ্গীর দু’জনই ২০০৭ সালের ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর ২০১৪ সালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ড. সাইফুল বরখাস্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি সহযোগী অধ্যাপক (গ্রেড-৪) হিসেবে কর্মরত আছেন। অপরদিকে ড. সুজাহাঙ্গীর অধ্যাপক (গ্রেড-২) হিসেবে কর্মরত আছেন।

এ বিষয়ে নবনিযুক্ত ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার বলেন, “জুলাই পরবর্তী সময়ে কোনো পদবি নিয়ে আমরা শিক্ষকরা রেষারেষি করব—এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উন্নয়ন। শিক্ষকদের প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত শিক্ষার মান ও গবেষণা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ বজায় থাকে সেটিই আমাদের কাম্য।”

অভিযুক্ত শিক্ষক ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম কার্যালয়ে তালা লাগানোর কথা স্বীকার করে বলেন, “ড. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর আমি নিজ উদ্যোগে নিজস্ব একটি তালা পরিচালকের কক্ষে লাগিয়ে দিই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি কোনো ইনভেন্টরি কমিটি গঠন করে, আমি সেই কমিটির কাছেই কেবল চাবি হস্তান্তর করব।”

ড. সুজাহাঙ্গীর অধ্যাপক অথচ আপনি সহযোগী অধ্যাপক হয়েও তাঁকে আপনার জুনিয়র বলেছেন কেন–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা দু’জনই ২০০৭ সালের একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। বিগত বছরগুলোতে আমি বঞ্চিত হয়েছি, আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। ড. সুজাহাঙ্গীর আমার চেয়ে বয়সে ছোট, তাই আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে আমার জুনিয়রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে— এমন বিবৃতি দিয়েছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।

মন্তব্য (০)





image

‎ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ: উপাচার্য

নিউজ ডেস্কঃ তীব্র আন্দোলনের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (...

image

গুচ্ছ ভর্তির বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক : ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে...

image

‎রোববার সকাল ১০টায় এসএসসির পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ

নিউজ ডেস্কঃ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পরীক্ষার পুন...

image

ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপের পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়...

পবিপ্রবি প্রতিনিধি: ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ পেলেন পটুয়াখা...

image

ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পর বাকৃবির প্রশাসনিক ভবনে তালা

বাকৃবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কম্বাইন্ড ডিগ্...

  • company_logo