• বিশেষ প্রতিবেদন

শ্রীপুরে আকষ্মিক পাখি মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্যাম্পল সংগ্রহ  

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১৭:৩২:০৯

ছবিঃ সিএনআই

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপরে শ্রীপুরে আকষ্মিক পাখি মৃত্যুর ঘটনায় বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। এসময় তারা সেখান থেকে কয়েকটি মারা যাওয়া পাখির নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠায়। ময়নাতদন্তের পর পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। 

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সিটাপাড়া গ্রামের পাখি মৃত্যুর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। তারা ওইদিন (বুধবার) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বায়োডাইভার্সিটি কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বায়োডাইভার্সিটি কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিটপাড়া গ্রামে অর্ধশতাধিক পাখি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। পখি মারা যাওয়ার ঘটনাস্থল সিট পাড়া গ্রামের গার্ডেনিয়া ওয়্যার লিমিটেড (পোশাক কারখানা) সামনে কযয়েকটি গাছ এবং স্থানীয় কৃষকদের শস্যক্ষেত রয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, সরজমিনে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে পাখি মারা যাওয়ার বিষয়ে কথা বলি ও মৃত পাখি সংগ্রহ করি। এসময় জানতে পারি ওইদিন স্থানীয় স্থানীয় গার্ডেনিয়া ওয়্যার লিমিটেড কারখানা শ্রমিক চা বিরতির সময় (সকাল ১০ টায়) কারখানা থেকে বাহিরে বের হলে দেখতে পান কয়েকজন নারী ও শিশু মারা যাওয়া পাখিগুলো ওই কারখানার সামনে এনে এক জায়গায় জড়ো করে রাখছে। পরে সে মারা যাওয়া পাখিগুলোর ছবি ভিডিও করে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) পোস্ট করে। ফেসবুকে পোস্টে তথ্য প্রচার দেন কৃষকের ক্ষেতের ফসল প্রায় নষ্ট করে ফেলায় ক্ষেতে দেয়া বিষ বা বিষ মিশ্রিত পানি খেয়ে অর্ধশতাধিক পাখি  মারা গেছে। বাস্তবে মৃত পাখির সংখ্যা আরো কম। বুধবার আমরা ঘটনাস্থল থেকে ১২টি মৃত পাখির তথ্য জানতে পেরেছি। এদের মধ্যে ২টি ছিল তিলা ঘুঘু এবং বাকি ১০টি ছিল বনছাতারে পাখি (অঞ্চলিক নাম খেই খেই পাখি)। এগুলোর মধ্যে ১০টি মৃত পাখি ঢাকায় আই আর ডিসি আর ল্যাবে ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা হিসেবে আনা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর আকষ্মিক পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

তিনি বলেন, আশেপাশে সব্জি ক্ষেত রয়েছে। আগের দিন হয়তো কেউ সেখানে কীটনাশক স্প্রে/প্রয়োগ করেছে। ওই বিষ কিংবা কীটনাশক খাওয়া কোন পোকামাকড় খেয়ে বিষক্রিয়া হওয়ার কারনেই এরকম ঘটনা ঘটে থাকতে পরে বলে মনে করেন তদন্ত দলের সদস্যরা। সকাল বেলা খালি পেটে পাখির ফিডিং টাইমে ওই পোকামাকড় খাওয়ার পরে হয়তো পাখি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিষ প্রয়োগ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে পাখি মারার জন্য কেউ বিষ প্রয়োগ করার কোন তথ্য আমরা পাই নি। এটা ছিল বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা। তবে ঢাকার রোগ অনুসন্ধান ও গবেষনাগারে স্যাম্পল ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের চিকিৎসক ভেটেরিনারী সর্জিন মোস্তাফিজুর রহমানও জানালেন একই তথ্য।

বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বায়োডাইভার্সিটি অফিসার রুবিয়া ইসলাম ছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকার খামারবাড়িতে কর্মরত প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরে কর্মরত ভেটেরিনারী সার্জন ফয়সাল আতিক, গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের চিকিৎসক ভেটেরিনারী সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান, বন বিভাগের ভাওয়াল রেঞ্জ অফিসার কাজী নাজমুল হোসেন, চারজন ভেটেনারী সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo