কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কনকনে ঠাণ্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে জনপদ। ব্যহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশা আর তীব্র ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। কনকনে ঠাণ্ডায় সময় মত কাজে বের হতে পারছেন না তারা। বৃষ্টির ফোটার মত পড়ছে কুয়াশা। এক সপ্তাহ ধরে মিলছে না সূর্যের দেখা। দিনের বেলাতেও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করছে। এতে করে দুর্ঘটনার আসঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা। হিম কুয়াশায় সকালে স্কুল, কলেজ ও কোচিং সেন্টারে যাওয়া শিক্ষার্থীরাও পড়েছেন বিপাকে।
শিশু বৃদ্ধ এবং গবাদি পশু নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশি। চরম ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো। কনকনে ঠাণ্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তাদের। শীত নিবারনের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন ঠাণ্ডায় কাবু মাণুষগুলো। এ অবস্থায় ফুটপাতের গরম কাপরের দোকানগুলোতে বেড়েছে ভিড়। এরপরও পেটের তাগিদে হিম কুয়াশা আর ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের চর দামালগ্রাম এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড শীত আর চরম ঠাণ্ডায় চরাঞ্চলের মানুষ অনেক কষ্টে দিন যাপন করছেন। এছাড়াও শিশু, বৃদ্ধ এবং গবাদী পশু নিয়ে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আমাদের চরাঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার। বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চর লুছনি এলাকার শুকুর আলী, শাহাদত হোসেন জানায় শীতের প্রকোপ এবং ঠণ্ডায় তারা সময়মতো কাজে বের হতে পারেন না। ফলে মাঝে মাঝেই কাজে যাওয়া হয় না। এতে করে আয় কমে গেছে তাদের। পৌর এলাকার রিকশাচালক মফিজুল ইসলাম জানায় ঠাণ্ডার কারণে মানুষ আর বাইরে বের হয় না। এজন্য এখন আর যাত্রী পাওয়া যায় না।
শীতের কারণে আয়-ইনকাম না হওয়ায় বউ-বাচ্চা নিয়া চরম বিপদের মধ্যে আছি। বেরুবাড়ী এলাকার সেকেন্দার আলী, শামিম মিয়া জানান, গবাদী পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। গরু ছাগলকে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য ঘরের কম্বল ও বস্তা দিয়ে গা ঢেকে রাখতে হচ্ছে। এছাড়াও বাড়ির মহিলা মানুষ সকাল সকাল উঠতে না পাড়ায় রান্নাবান্নাও দেরিতে করতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ইফতেখারুল ইসলাম পল্লব বলেন, ঠাণ্ডার কারণে হাসপাতালে এখন শীতজনিত বিভিন্ন রোগির চাপ বেড়েছে। তবে সরকারের যে চিকিৎসা ব্যবস্থা দেয়া আছে আমরা রোগীদের সেভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছি এবং রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন এমন থাকবে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
মন্তব্য ( ০)