
বগুড়া প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জ থেকে প্রেমিকের সাথে বগুড়ায় ঘুরতে আসা এক স্কুল শিক্ষার্থীকে বাসের ভিতরেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আরকে ট্রাভেলস এর চালকের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক তা ধামাচাপা দিতে লামছাম বিচার করে প্রেমিক ও ভুক্তভোগী কিশোরীকে বাড়িতে পাঠায় বাস কর্তৃপক্ষ ও মোটর শ্রমিক নেতাদের একাংশ । এর পরপরই গণমাধ্যম কর্মীরা ভুক্তভোগী কিশোরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বাসচালকের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ আনেন যদিও দিনভর নাটকীয়তা শেষে রাতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রাথমিক তদন্তে তারা শ্লীলতাহানির ঘটনা পেয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে জেলা জুড়ে এই ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে আর কে ট্রাভেলস এর অভিযুক্ত সেই চালক সাকিব হাসান (২৮) কে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে আটক করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থীর সাথে মুঠোফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থী ঢাকা মিরপুর নিবাসী তার এক ছেলে বন্ধুর সঙ্গে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় থেকে ‘আর কে ট্রাভেলস’ নামের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব ২৭৩১) বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাসটি বগুড়া শহরের প্রবেশের আগে চালক সাকিব এবং অন্য পরিবহন শ্রমিকেরা ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর ছেলে বন্ধুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শাহজাহানপুর থানার কোন একটি এলাকায় বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর বাসেই চালক সাকিব ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে মর্মে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান ভুক্তভোগী। এরপর বিকেলে চালক সাকিব মেয়েটিকে নিয়ে ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পরিবহনের অন্যান্য শ্রমিকেরা বিষয়টি টের পান এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। তবে এর পরপরই আর কে পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা অন্য শ্রমিকেরা অভিযুক্ত চালক সাকিবকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে আরেকটি বাসে করে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে বগুড়া জেলা পুলিশ অভিযুক্ত চালককে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে আটক করে এবং মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকেও আনা হয় বগুড়ায়।
এদিকে রাতভর নানা নাটকীয়তা শেষেও জট খোলেনি এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার। সোমবার রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে। এদিকে অভিযুক্ত চালককে নির্দোষ প্রমাণ করতে শুরু থেকেই তৎপর হয়ে আছে আর কে ট্রাভেলসের কর্তৃপক্ষ এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের একাংশ।
এছাড়াও ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের আগ পর্যন্ত সেই স্কুলছাত্রী চালকের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ দিলেও রাতে জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক ও মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে তারা শ্লীলতাহানির ঘটনা পেয়েছে তবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে সাকিব নামের অভিযুক্ত বাস চালককে এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে শাহজাহানপুর থানার নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কে নিরাপদে রাখা হয়েছে। এজাহার প্রাপ্তি সাপেক্ষে তারা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
মন্তব্য (০)