
নওগাঁ প্রতিনিধি: দেশজুড়ে চলছে সনাতন ধর্মের মানুষদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। এবার জেলার ১১টি উপজেলা ও ৩টি পৌর সভার মোট ৭৯৯টি পূজা মণ্ডপে চলছে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বর্ণীল রঙের রঙ্গিন উৎসব। এবারের দূর্গা পূজা যেন সুন্দর ও ছিমছাম পরিবেশে সম্পন্ন হয় সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পূজাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজার নবমী দিন পর্যন্ত জেলার কোথাও কোন প্রকারের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়নি। প্রতিটি উপজেলায় পূজার উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়তই জেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করছেন। প্রতিটি পূজা মণ্ডপের সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছেন কর্মকর্তারা। এতে করে পূজা মণ্ডপের প্রতিটি মানুষ যেমন অনুপ্রাণিত হচ্ছে তেমনি ভাবে অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকছে কতিপয় ব্যক্তিরা।
বুধবার মহানবমীর দিনে নওগাঁর জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা জেলার রাণীনগর উপজেলার ত্রিমোহনী বাজার শ্রী শ্রী স্বরকালীতলা দুর্গা মন্দির, কাশিমপুর নমশুদ্রপাড়া দুর্গা মন্দির, রাণীনগর হাটখোলা দুর্গা মন্দির, রাণীনগর উপজেলা কালীবাড়ী হাট কেন্দ্রীয় মন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং উপস্থিত সকলের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: সোহেল রানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাবিলা ইয়াসমিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: নজরুল ইসলাম, সকল মণ্ডপের কমিটির সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনের সময় শুভেচ্ছা উপহার বিনিময় করা হয়।
উপজেলার ত্রিমোহনী ত্রিমোহনী বাজার শ্রী শ্রী স্বরকালীতলা দুর্গা মন্দির এলাকার বাসিন্দা প্রবীর কুমার পাল জানান বিগত বছরের ন্যায় এবছরও উপজেলা প্রশাসন ও আনসার সদস্যদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে জেলা প্রশাসক স্যারের আগমন আমাদের ব্যাপক ভাবে অনুপ্রানিত করেছে। যার ফলে সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা প্রতিমা বির্সজন প্রদানের মাধ্যমে এবারের দূর্গা উৎসব শেষ করতে সক্ষম হবো।
জেলার রাণীনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি চন্দন কুমার মোহন্ত বলেন একটি পূজা মণ্ডপে জেলার প্রধান কর্মকর্তার আগমন নি:সন্দেহে বড় অনুপ্রেরণার বিষয়। এতে করে ওই মণ্ডপের সার্বিক পরিবেশ যেমন সুন্দর হয় তেমনি ভাবে কোন প্রকারের দুর্ঘটনা ঘটারও কোন সুযোগ থাকে না। পূজা মণ্ডপে ডিসি স্যারের আগমনে আমরা অনেক খুশি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন জেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজার সকল কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করার পাশাপাশি প্রতিটি পূজা মণ্ডপে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া আনসার সদস্যরাও নিরাপত্তা বজায় রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। জেলাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে কোন প্রকারের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবার আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জেলার দূর্গা পূজা শেষ করে দৃষ্টান্তর স্থাপন করবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। গত বছরও জেলাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা জেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে দূর্গা পূজার উৎসব সমাপ্ত করেছি তেমনি ভাবে এবছরও জেলার সকল ধর্মের মানুষের ভালোবাসা নিয়ে সুন্দর ও সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে আমরা পুরো পূজার উৎসব শেষ করতে সক্ষম হবো। চেস্টা করেছি পূজার শুরু থেকে প্রতিটি দিনই জেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের পূজা পরিদর্শন করার। এছাড়া প্রতিটি পূজা মণ্ডপের সার্বিক খোঁজখবর রাখার চেস্টা করছি। এবারো আমরা শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জেলার সকল মণ্ডপে পূজা সম্পন্ন করতে সক্ষম হবো।
মন্তব্য (০)