• বিনোদন

আমার দুঃখ বা অভাব নেই কিন্তু দীর্ঘশ্বাস ফেলছি: সোহেল রানা

  • বিনোদন

ফাইল ছবি

বিনোদন ডেস্ক : নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা একজন মানুষের জীবনে এতগুলো পরিচয় যে কতটা গৌরবের, তা বলে শেষ করা যায় না। তবে সেই মানুষটিই যখন ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে বলেন, ‘আমাদের সম্মান কোথায়? কেন দীর্ঘশ্বাস ফেলছি?’ তখন তা যেন সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়েই দাঁড়ায়। দীর্ঘশ্বাস জাগানিয়া কথাগুলো বলছিলেন দেশের চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সোহেল রানা।

সম্প্রতি পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বয়সের ভারে আর নানান শারীরিক জটিলতায় নায়ক আজ জীবনযুদ্ধে একেবারেই ক্লান্ত। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় কষ্ট শারীরিক নয়, মানসিক-সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে যে প্রাপ্য সম্মান তা তিনি পাচ্ছেন না বলে মনে করেন।

গত সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরেছেন তিনি। ফেরার পর তাঁর খোঁজ নিতে যোগাযোগ করলে আক্ষেপ করলেন নানা বিষয় নিয়ে। যে আক্ষেপের প্রধান ভাষা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সনদ।

সোহেল রানা বলেন, “জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মুক্তিযোদ্ধা সনদ কী কাজে লাগছে? এই কার্ডটা আমাদের দেওয়া হয়েছিল সম্মানের প্রতীক হিসেবে। অথচ আজ সেটা যেন হয়ে গেছে এক অপ্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র। আমরা যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম, আমাদের মূল্য এখন কোথায়?”

চলচ্চিত্র জগতের একজন কিংবদন্তি এই শিল্পী প্রথম আলোচনায় আসেন ‘মাসুদ রানা’ সিনেমা দিয়ে। তবে দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’-এর প্রযোজক হিসেবেই তিনি চলচ্চিত্র ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। তাঁর মতো একজন মুক্তিযোদ্ধা যখন সমাজে অসম্মানবোধে কাতর হন, তখন সেটি গোটা জাতির আত্মজিজ্ঞাসার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হাসপাতালে থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা যখন এই বয়সে হাসপাতালে যাই, সেখানে আমাদের আরও যত্নবান হওয়া দরকার ছিল না? একটি রাষ্ট্রের কাছে মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কে হতে পারে? অথচ, এমন ব্যবস্থায় আমরা যেন নিজের দেশেই অবহেলিত নাগরিক!’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২০ বছর পর দেশে হয়তো কোনো মুক্তিযোদ্ধাকেই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। সময়ের নিয়মেই আমরা চলে যাব। তখন কী মুক্তিযুদ্ধ শুধু পাঠ্যবইয়ে আর স্মৃতিফলকে সীমাবদ্ধ থাকবে?’

মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিক মর্যাদা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোহেল রানা বলেন, ‘আমার বিভিন্ন ক্লাবের সদস্য পদ আছে- উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো কাজে গেলে আমাকে লাইনে দাঁড়াতে হয়, অপেক্ষা করতে হয়। রাষ্ট্র কী আমাদের জন্য সম্মানজনক কোনো ব্যবস্থা করতে পারত না?’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সনদ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি পরিচয়পত্র হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এখন সেটাই হয়ে গেছে সবচেয়ে কম দামি পরিচয়। এটা আমাদের অপমান করার নামান্তর।”

চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সোহেল রানা পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছেন বিপুল ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তা। সেই মানুষটিই আজ মানসিক কষ্টে ভুগছেন, সম্মান না পাওয়ার যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছেন।

আক্ষেপ ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘আমার দুঃখ নেই, অভাব নেই। কিন্তু আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি। আমরা যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, তাদের যদি এমন অবস্থা হয়– তাহলে নতুন প্রজন্মের চোখে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা কীভাবে তুলে ধরা যাবে?’

 

 

মন্তব্য (০)





image

ভক্ত-অনুরাগীদের যে দুঃসংবাদ দিলেন অভিনেত্রী

বিনোদন ডেস্ক : ২০১২ সালে ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রান...

image

কুসুমেরও কামনা-বাসনা রয়েছে: জয়া আহসান

বিনোদন ডেস্ক : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র ৯...

image

শাকিব খানের সিনেমাটি কালা জাহাঙ্গীরের জীবনী নয়, দাবি প্রয...

বিনোদন ডেস্ক : শাকিব খানকে নিয়ে পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদের পরবর্তী সিনেমা নিয়...

image

বাবা হারালেন মিষ্টি জান্নাত

বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাতের বাব...

image

বিয়ের জন্য যোগ্য পাত্র পাচ্ছেন না এই অভিনেত্রী

বিনোদন ডেস্ক : বিয়ের জন্য যোগ্য পাত্র খুঁজে পাচ্ছেন না অভিনেত্রী তমা মির...

  • company_logo