চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : দেশের স্বার্থে মানবাধিকার রক্ষায় সকলকে সোচ্ছার হতে হবে- বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট বিভাগের বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া বলেছেন, দেশের স্বার্থে মানবাধিকার রক্ষায় সকলকে সোচ্ছার হতে হবে। বিচারপতি মানবাধিকারের সূচনার কথা উল্লেখ করে সকলকে মানবিক হওয়ার ও আহবান জানান। তিনি বলেন, মানবাধিকার মানুষের জন্মগত অধিকার। যে ব্যক্তি এ অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, সে বুঝতে পারেন যে, জীবন থেকে তিনি কি হারিয়েছেন। দেশে কঠোর আইন থাকলেও নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা কমছেনা। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে রিট করার ক্ষেত্রে আইনজীবিদের আরো সতর্ক হতে হবে। সাংবাদিকদের বাক স্বাধীনতার উপর জোর দিয়ে বিচার বর্হিভূত হত্যা, খুন, গুম প্রতিরোধকল্পে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের তিনি প্রশংসা করেছেন।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ১৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪র্থ সম্মেলন-২৪ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৪ ডিসেম্বর শনিবার বি.এইচ.আর.এফ উপদেষ্টা পি.এইচ,পি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের চেয়ারপারসন এডভোকেট এলিনা খান ও মহাসচিব এড. জিয়া হাবিব আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ এটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে পুরো বাংলাদেশ আজ এক কাতারে দাড়িয়েছে। শুধু নেই কারা? যারা গণতন্ত্রের নামে মানুষ হত্যা করেছে, গুম করেছে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, ন্যায় বিচারের পদকে রুদ্ধ করেছে, বিচারের নামে প্রহসন করেছে তারা এক কাতারে নেই। তিনি আরো বলেন, আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস এই দিনে সবাই বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে যায়। আজকে সেখানে সবাই ছিলেন, কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা ছিলেন না। কি এমন মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন যে বুদ্ধিজীবিদের শ্রদ্ধা জানাতে আপনারা যাননি। আপনারা শুনলে আপনাদের গায়ের লোম শিউরে উঠবে। সেটি হচ্ছে শহিদ বুদ্ধিজীবি স্মৃতি সৌধের পেছনে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় কবর স্থান হয়েছে। সেই কবর স্থানের একেকটি কবরে ৭০-৮০ জনের লাশ দাফন করা হয়েছে জুলাই বিপ্লবে। আমরা সে প্রজন্মের রক্তের ঋন পরিশোধের জন্য মানবাধিকার কর্মী হিসাবে বাংলাদেশের রাজপথে অতন্দ্র প্রহরীর মত থাকব। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৪ এর বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) জান্নাতুল ফেরদৌস, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম.এ মালেক। আলোচনায় অংশ নেন, সাংবাদিক ওসমান গণি মনসুর, সাংবাদিক শাহনেওয়াজ চৌধুরী, বার কাউন্সিলের সদস্য বদরুল আনোয়ার, জেলা পিপি মোঃ আশরাফ হোসেন চৌঃ রাজ্জাক, মহানগর পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি মোঃ নাজিম উদ্দীন চৌঃ, সি.এম.পির প্রতিনিধি জি.এম.মাজহারুল ইসলাম, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির ভিসি নাজিম উদ্দীন, ডা. শফিউল আলম, বি.জে.এম.ইর মাহাবুবুর রহমান, ডি.জি রেজাউল করিম, বিভাগীয় পরিচালক (সমাজ কল্যাণ) কাযী নজিবুর রহমান, সাংবাদিক এ.কে.এম মকসুদ আহমদ, এড. সুলতানা আক্তার রুমী প্রমুখ।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক বলেন, পিপলস রিপাবলিক অফ বাংলাদেশের বাংলা করা হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এখানে প্রজা শব্দটা কোথা থেকে আসল? আমার মনে হয় প্রজাটা রাখা হলো এই জন্য যে, যারা সরকারে যাবেন, তারা আমাদের প্রজা হিসেবে দেখবেন। এই প্রজা শব্দটা না থাকলে আমাদের জন্য ভালো। আপনারা বিষয়টি দেখবেন। কোন সংবাদ নিয়ে পত্রিকা বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কারো কোন অভিযোগ থাকলে আগে প্রেস কাউন্সিলে যেতে হবে। সেখানে সুরহা না হলে বা তিনি সন্তুষ্ট না হলে তখনি কেবল তিনি আদালতে মামলা করতে পারেন। কিন্তু দেখা যায় প্রেস কাউন্সিলে কেউ যান না। আগে মামলা টুকে দিচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন উথাপান করে বলেন, এমনটি হলে প্রেস কাউন্সিলের আর প্রয়োজন কি? উপস্থিত এটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিষয়টি আশা করছি আপনারা দেখবেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি সুফী মিজানুর রহমান কুরআন-হাদিস ও ইসলামী মনিষীদের উদ্ধৃতি দিয়ে মানবাধিকারের নমুনা ও একজন মুমিনের উন্নতি অবনতি কি কি বিষয়ে নিহিত তা তুলে ধরেন । বি.এইচ.আর.এফ চেয়ারপারসন এড. এলিনা খান বলেন, আমাদের প্রত্যেক কে পারিবারিক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সৎ ও সচেতন থাকতে হবে। যেখানে মানবাধিকার লঙ্গন হয় সেখানে সংগঠনের প্রতিটি শাখা প্রতিনিধিকে সোচ্চার হতে হবে। তিনি আরো বলেন, শাখা বাড়–ক, সেটা আমার কাছে বিবেচ্য নয়, এমন শাখা চাই, যারা মানবাধিকার কর্মকান্ডে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে।
সংগঠনের মহাসচিব, বিশিষ্ট কলামিষ্ট এড. জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ভবিষ্যৎতে যারা মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকান্ডে অবদান রাখবে, তাদেরকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হবে। অনুষ্ঠানে সংগঠনের উত্তরা শাখাকে শ্রেষ্ঠ শাখা, আইন পেশায় ৫১ বছর পূর্তিতে এ.কে.এম মহসিন উদ্দীন আহমদ চৌ: কে সম্মাননা ও হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন কার্যক্রমে জীবনবাজি রেখে যারা কাজ করেছেন তাদেরকে সার্টিফিকেট দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়। এদিকে সংগঠনের চেয়ারপারসন এড. এলিনা খান ও মহাসচিব জিয়া হাবিব আহসান চন্দনাইশে ভিজিটে গেলে চন্দনাইশ উপজেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক মাওলানা মোজাহেরুল কাদের ও সেক্রেটারী এড. মকসুদুজ্জামান ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
মন্তব্য (০)