• লিড নিউজ
  • জাতীয়

‎৪০০ বছর ধরে জমে আছে চাপ, অপেক্ষা করছে ভয়ংকর ভূমিকম্প

  • Lead News
  • জাতীয়

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ একসঙ্গে পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প। মাত্র ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্প রাজধানী ঢাকা ও তার আশেপাশে কেড়ে নিয়েছে ১০ প্রাণ; সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন ৬ শতাধিক মানুষ; ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো স্থাপনা ও ভবন। পরদিনই একই জোনে তিনবার অনুভূত হয়েছে আফটার শক, রিখটার স্কেলে যার একটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৭। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শঙ্কা কাটেনি এখনও। চলতি সপ্তাহেই আসতে পারে আরও কয়েকটি আঘাত।

‎এর মধ্যেই এবার খবর, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পটি ছিল সামান্যই। ঢাকা অঞ্চলের জন্য হয়তো অপেক্ষা করছে আরও ভয়ংকর কিছু।   

‎জানা গেছে, বাংলাদেশের নিচে একটানা নড়াচড়া করছে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা—এই তিনটি টেকটোনিক প্লেট। এর ফলে, তৈরি হয়েছে ডাউকি, মধুপুর, সিলেট লাইনমেন্টসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ফল্ট লাইন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের প্রধান উৎস হলো মধুপুর ফল্ট।

‎ভূতাত্ত্বিকদের মতে, মধুপুর ফল্টে প্রায় ৪০০ বছর ধরে জমে আছে চাপ। আর এই চাপ মুক্তি পেলে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা হতে পারে ৮। রাজধানী ঢাকা এই ফল্ট থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মধুপুর ফল্টে যদি ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পও হয়, তবে টাঙ্গাইলের পাশাপাশি ঢাকার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে।

‎শুধু ঢাকা-টাঙ্গাইলই নয়; এই মধুপুর ফল্টের চাপ বড় আকারে অবমুক্ত হলে ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে কুমিল্লা, নোয়াখালী, বগুড়া এবং রাজশাহীর অনেক এলাকা। 

‎উল্লেখ্য, ২০১২ সালের এক ভূমিকম্পে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের বোকারবাইদ গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ওই ফাটলের ব্যাস ছিল ৫–৬ ইঞ্চি এবং গভীরতা প্রায় ২৫–২৬ ফুট।

‎এদিকে দুশ্চিন্তা আরও বাড়াচ্ছে সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকার ডাউকি ফল্ট। ১৮৯৭ সালে ডাউকি ফল্টের পূর্ব প্রান্তে ৮.৭ মাত্রার একটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, কিন্তু ডাউকি ফল্টের পশ্চিম প্রান্তে ৪০০ বছর ধরে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। এই প্রান্তে রয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অবস্থান। আর সিলেট থেকে খুব বেশি দূরে নয় রাজধানী ঢাকার অবস্থান। সেখানে যদি ৬ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হয় তাহলে এর বড় প্রভাব পড়বে রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলেই।

‎আবহাওয়া অধিদপ্তরের নথিভুক্ত ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে ৩৯টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে। এর মধ্যে ১১টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৮৬ কিলোমিটার এলাকার ভেতরে। অর্থাৎ ২৮ শতাংশের বেশি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার কাছে। এসব ভূমিকম্পের মাত্রা ৩ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৭। এর মধ্যে শুক্রবার নরসিংদীতে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রার (৫ দশমিক ৬) ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ঢাকার ১০০ থেকে ২৬৭ কিলোমিটারের মধ্যে বাকি ২৮টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল।

‎এই পাঁচ বছরে মোট ১৮ জেলায় ভূমিকম্প হয়েছে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, পাবনা, হবিগঞ্জ, রাঙামাটি, চুয়াডাঙ্গা, শরীয়তপুর, যশোর ও কুড়িগ্রাম।

মন্তব্য (০)





  • company_logo