• অপরাধ ও দুর্নীতি

ফেনীতে নিখোঁজের ৪ দিন পর ডোবায় মিলল শিশুর লাশ

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:৫১:৪৯

ছবিঃ সিএনআই

ফেনী প্রতিনিধিঃ ফেনীতে নিখোঁজের ৪ দিন পর ডোবায় মিলল অপহৃত শিশুর লাশ। আজ (১২ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী শহরতলীর দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে আহনাফ নাশিদ (১০) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আহনাফ নাশিদ ফেনী কার্ডিয়াক হাসপাতালের পরিচালক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে কর্মরত মাঈন উদ্দিন সোহাগের একমাত্র সন্তান। সে ফেনী গ্রামার স্কুলের ছাত্র ছিল। একাডেমী আতিকুল আলম সড়ক থেকে প্রাইভেট পড়ে আর বাসায় ফেরেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে একাডেমী আতিকুল আলম সড়কে প্রাইভেট পড়তে যায় আহনাফ। প্রাইভেট পড়ে আসার পথে কে বা কারা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারী চক্র তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে ১২ লাখ টাকা। এ ঘটনায় ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তার পিতা বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে সন্দেহভাজন আটক করে। তার জবানবন্দির আলোকে আজ দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় রেললাইনের পাশে আহনাফের লাশ পাওয়া যায়।

এদিকে আজ বিকেল ৩টায় ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, নাশিদ ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিখোঁজ হয়। রাত ২টার দিকে ভিকটিমের বাবা ফেনী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এ ডায়েরির পরিপ্রেক্ষিতে নিখোঁজ শিশুটিকে খুঁজতে আমাদের মোবাইল টিম মাঠে কাজ শুরু করে। গতকাল বুধবার রাতে ভিকটিমের পিতা সোহাগ থানায় এসে বলে আশ্রাফ হোসেন তুষার (১৮) নামের একটি ছেলেকে তার সন্দেহ হয়। সে ফেনী পলিটেকনিক ইনষ্ট্রিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তখন ভিকটিমের পিতাকে আমরা বলি থানায় একটি মামলা করতে। ভিকটিমের পিতার মামলার প্রেক্ষিতে আমরা তুষারকে আটক করি। তাকে থানায় ৪ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারণ বেরিয়ে আসে। তুষারের জবানবন্দির আলোকে এ ঘটনায় জড়িত আমরা আরো ২ জনকে আটক করে নিয়ে আসি। তারা হলেন মোবারক হোসেন ওয়াসিম, ওমর ফারুক রিফাত।

তিন আসামীর জবানবন্দির কারণ বর্ণনা করে পুলিশ সুপার বলেন, শিশুটি যখন কোচিং শেষ করে বাসায় আসছিলেন তখন তুষার এবং ওয়াসিম তাকে বিভিন্ন জায়গা ঘরতে নিয়ে যাবে বলে সিএনজি চালিত অটোরিকসায় উঠায়। পরে সালাউদ্দিন মোড় এলাকায় রেলনাইনের পাশে নিয়ে যায় নাশিদকে। তখন তুষার রিফাতকে বলে তুই নাশিদকে দেখে রাখ। আর ওয়াসিমকে বলে একটি জুস কিনে এনে তার মধ্যে ঘুমের ঔষুধ গুড়ো করে মিশিয়ে নাশিদকে খাওয়াতে। ওয়াসিম তুষারের কথামত জুসটি নাশিদকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। নাশিদ ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি করে বাড়িত যাওয়ার জন্য। তখন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের পাশে নিয়ে যায় তারা। ঘটনা জানাজানির ভয়ে তখন এ শিশুটির গলায় চাদর পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে শিশু নাশিদের সাথে থাকা স্কুলের ব্যাগের ভিতর পাথর ডুকিয়ে পাশে একটি পেনা ভর্তি ডোবায় তার লাশ ডুবিয়ে রেখে চলে যায়।

এসপি আরো জানান, আসামী তুষার নাশিদকে আগে থেকে চিনতো। আর এর আগে গত ৫ আগষ্ট ভিকটিমের পিতার মোবাইলটি হারিয়ে যায়। তখন এ মোবাইলটি তুষার পায়। এ মোবাইলটি তুষার ব্যবহার করে। সে সুবাদে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং এ মোবাইল থেকে ভিকটিমের পিতাকে হোয়াটস আপে ম্যাসেজ দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। ভিকটিমের পিতা জানায় তুষারের সাথে তার কোন বিরোধ ছিলনা।

 এসপি বলেন, এ ঘটনায় আমরা তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছি। আজ দুপুরে আমরা ডোবা থেকে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করি। পরবর্তীতে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসামীদের সর্বচ্চ শাস্তি হয় আমরা সে ব্যবস্থা করব।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo