• বিশেষ প্রতিবেদন

নওগাঁয় ন্যায্য মূল্যের দোকানে স্বস্তি মিলছে স্বল্প আয়ের মানুষদের

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১৫:০১:৪২

ছবিঃ সিএনআই

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের চালু করা ন্যায্য মূল্যের দোকানে স্বল্প আয়ের মানুষদের স্বস্তি মিলছে। আগামীতে দোকানে আরো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যুক্ত করে এমন উদ্যোগের দীর্ঘ পথচলা দেখতে চান ভোক্তারা। নওগাঁ জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় ও সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাজারে ন্যায্য মূল্যের এই দোকান চালু করা হয়েছে। এতে করে দ্রব্যমূল্যের এই উর্দ্ধগতির বাজারে স্বল্প আয়ের খেটে-খাওয়া শ্রেণির ও মধ্যম আয়ের মানুষদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রধান অতিথি হিসেবে দোকানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম রবিন শীষ, অন্যান্য কর্মকর্তা, ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। দোকানটি উদ্বোধনের পর থেকেই কম দামে পন্য কিনতে ভীড় করেন ক্রেতারা। বাজার মূল্য থেকে কিছুটা কম দামে পন্য পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান ভোক্তারা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ বলেন স্বল্প আয়ের মানুষদের কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসক স্যারের সার্বিক নির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু করা হয়েছে। মাঠে উৎপাদিত কৃষকদের ফসল বিশেষ করে কাঁচা সবজি হাত বদল হলেই দাম বেড়ে যায়। যার কারণে কৃষকরা যেমন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি ভাবে সাধারণ ভোক্তাদের দ্বিগুন মূল্য দিয়ে খোলা বাজার থেকে সেই পণ্যগুলো কিনতে হচ্ছে। ফলে উভয় পক্ষই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন আর তৃতীয় পক্ষ লাভবান হচ্ছেন। আর বাজারে এসে প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সকল শ্রেণির ভোক্তাদের। এমন সমস্যা থেকে উত্তোরণের লক্ষ্যেই সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনে ন্যায্য মূল্যের এই দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের নায্য মূল্য যেমন পাচ্ছেন তেমনি ভাবে স্বল্প আয়ের মানুষরাও কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন ভোক্তারা খোলা বাজারের চেয়ে ন্যায্য মূল্যের দোকানে ৫-১০টাকা কম দামে পণ্য পাচ্ছেন। দোকানে আপাতত তিনটি পণ্য আলু ৬৫টাকা ও পেঁয়াজ ১০৫টাকা কেজি এবং ডিম ৪৫টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। এই দোকান থেকে একজন ক্রেতা ২হালি ডিম এবং ২কেজি করে আলু ও পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই দোকান চালু থাকবে। তবে ভোক্তাদেও চাহিদার উপর নির্ভর করে আগামীতে আরো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো দোকানে যুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

ন্যায্য মূল্যের দোকানে পণ্য কিনতে আসা শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকার আইনজীবীর সহকারি ময়েজ উদ্দিন বলেন প্রতিদিনই বাজারে কোন নোটিশ ছাড়াই কোন না কোন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এতে করে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষরা জীবন-যাপন করতে হিমশিম খাচ্ছি। বাজারের তালিকা আর ছোট করা যাচ্ছে না। এমন উর্দ্ধগতির বাজারে ন্যায্য মূল্যের দোকান আমাদের কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। তবে শুধুমাত্র আলু, পেয়াজ আর ডিমই নয় অতিদ্রুত আমরা তেল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্য কম দামে এই দোকান থেকে পেতে চাই। আমাদের এমন দাবী দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।  

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন জেলায় উৎপাদিত কাঁচা সবজির ক্ষেত্রে স্থানীয় খোলা বাজারে একটি প্রতিযোগীতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই ন্যায্য মূল্যের এই দোকান চালু করা হয়েছে। সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবজি এনে এই দোকানে ন্যায্য মূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌছে দেয়া হচ্ছে। এতে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই উপকৃত হবেন। পরবর্তিতে ফলাফল ভালো হলে জেলার প্রতিটি উপজেলায় এই দোকান চালু করা হবে। এছাড়া প্রতিটি হাটে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের জন্য টোল ফ্রি সবজি বিক্রির কর্ণার চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি আশাবাদি এমন কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে জেলার কৃষক ও ভোক্তারা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি লাভবানও হবেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo