গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অহিংস গণঅভ্যুথান বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘লুণ্ঠিত উদ্ধার করব, বিনা সুদে পুঁজি নেব’ এই স্লোগান প্রচার করে ঋণ দেওয়ার নামে স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছেন প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
সুদমুক্ত ঋণ প্রদানে গাজীপুর জেলার ভুয়া সমন্বয়ক হয়েছিলেন নগরীর ওঝারপাড় এলাকার আব্দুল মতিন ব্যাপারী ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে মধু (৫৫)। তাকে আটকের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জড়িত আরও চারজনের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গাছা থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শরীফপুর আশরাফ মার্কেট এলাকায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে। পরবর্তী সময়ে গাছা থানায় খবর দিলে পুলিশ তল্লাশি করে টাকা গ্রহণের নামের তালিকা ও কয়েকটি টিকিট বই জব্দসহ তাদের আটক করে রাত ১০টার দিকে হেফাজতে নেয়। পরে রাত ১টার দিকে ভুক্তভোগী মন্টু মিয়ার অভিযোগ গ্রহণ করে শনিবার দুপুরের পর তাদের নামে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পুকিবাজিত এলাকার আব্দুল হালিমের ছেলে জাফর (৪০), জামালপুরের মেলান্দহ থানার কুলিয়া গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে আলাল (৪৫), ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সাপখালির মৃত কুরবান আলীর ছেলে রমজান (৪০)। গ্রেপ্তারকৃতরা নগরীর গাছা থানার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করতেন।
তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রচার করেন, ঋণ নিতে আগ্রহীদের আগামী ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে সম্মেলনে উপস্থিত হতে হবে। ঋণের আবেদন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য প্রতারকরা আগ্রহীদের থেকে তিনশত থেকে চারশত টাকা আদায় করে। ঋণপ্রত্যাশী ও সম্মেলনে উপস্থিতির ডেলিগেট টিকেট স্বরুপ টোকেন দেওয়া হয়। বলা হয়, টোকেনধারী সবাইকে দেওয়া হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের পক্ষ থেকে তিন লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হবে।
গ্রেপ্তারকৃত মধু জানান, টাকার নিয়ে লোন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য টিকেট দিয়েছেন। কথা ছিল, ওই টিকেট নিয়ে নির্দিষ্ট বাসে ঢাকার সম্মেলনে যাবেন ঋণপ্রত্যাশীরা। সেখানে সম্মেলনের লগোযুক্ত একটি করে টি-শার্ট দেওয়া হবে। একই সময় ঋণপ্রত্যাশীদের চূড়ান্ত তালিকা করা হবে। সেখান থেকে জনপ্রতি পেয়ে যাবেন ৩ লাখ থেকে কোটি টাকা ঋণ। মাসিক তিন হাজার টাকা হারে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের সুযোগ পাবেন প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতা। গাজীপুর থেকে এক হাজার লোককে ঋণ দেওয়া হবে বলে প্রচার করা হয়। এর মধ্যে ৮৫০ জন হয়ে গেছে আর ১৫০ জন বাকি ছিল।
ওই এলাকার গেসু মিয়া, কাজল, রতন, মতিসহ অর্ধশতাধিক ভুক্তভোগী বলেন, আমোদের থেকে ৩০০ টাকা করে নিয়েছে। যাদের থেকে ৪০০ টাকা নিয়েছে তাদের ঢাকায় গিয়ে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তাদের বাসের টিকেট, সম্মেলনে গেলে একটি করে টি-শার্ট ও ঋণের নিশ্চয়তা দিয়েছিল। প্রায় ১৫ েদিন ধরে এসব কথা বলে টাকা তুলে মধু তার বাড়ির অসমাপ্ত কাজ শেষ করছে।
অপর দিকে এ বিষয়ে এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আ-ব-ম মোস্তফা আমিনকে কল করলে তিনি বলেন, টাকা তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই।তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করার কথাও বলেন তিনি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলি মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য ( ০)