• বিশেষ প্রতিবেদন

রংপুর সিটিতে অবৈধ অটো ৯৫ ভাগ যন্ত্রতন্ত্র

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১৫:২০:২০

ছবিঃ সিএনআই

রংপুর ব্যুরোঃ  রংপুর সিটি কর্পোরেশনে বৈধ লাইসেন্স ও কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধ অটোরিকশা ৯৫ ভাগ যন্ত্র তন্ত্র ও নিরোবিচ্ছিন্ন ভাবে চলাচল করছে।এর ফলে মহানগর জুড়ে তীব্র  যানজটে বৃষ্টি হচ্ছে।এতে ভোগান্তি আর দুর্ভোগে পড়ছেন নগর বাসি।অন্যদিকে নেই ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রায় দুই মাস ধরে।নগরীর কিছু পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ দেখা গেলেও দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করছেন তারা।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনে প্রায় ৫০-৫৫ হাজার অবৈধ অটো রিক্সা যন্ত্র তন্ত্র ভাবে চলাচল করছে।নগরী জুড়ে এর ফলে প্রতিদিনই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ অফিস আদালতের লোকজন পড়ছেন ভোগান্তি আর দুর্ভোগে।আবার সময়মতো যেতে পারছেন না গন্তব্যস্থানে। 

রংপুর নগরীতে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার অটো রিক্সার বৈধ কাগজপত্র দিয়েছেন সিটি কর্পোরেশন।কিন্তু চলাচল করছে ৫০-৫৫ হাজার অটো রিক্সা।তথ্য অনুযায়ী  প্রায় ৯৫ ভাগ অটো রিক্সার নেই বৈধ কাগজপত্র।সিটি কর্পোরেশনে ২০৬ বর্গ কিলোমিটারে চলছে এসব তিন চাকার বাহন।  

অটো চালকরা ইমরান আলী,বাবুল মিয়া,শাহিন হোসেন জানান রংপুর নগরীতে হাজার হাজার অটো রিক্সা চলছে লাইসেন্স কাগজপত্র বিহীন।এর ফলে যাদের লাইসেন্স আছে তারা আবার বিভিন্ন বিড়ম্বড়ায় শিকার হচ্ছেন।

রংপুর মহানগরীর সিটি কর্পোরেশন শহরে ৫ হাজার ৮০০ বৈধ লাইসেন্সের বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় ৫৫ হাজারের বেশি অটোরিকশা চলাচল করে।নগরীর পাবলিক লাইব্রেবী,সিটি বাজার সড়ক হতে কাচারী বাজার থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে নগরবাসী।

রংপুর মহানগরীর মডার্ন মোড়, পার্কের মোড়, কলেজ রোড, লালবাগ, শাপলা চত্বর, গ্রান্ড হোটেল মোড়, জাহাজ কোম্পানি মোড়, সুপার মার্কেট ট্রাফিক মোড়, সিটি বাজার মোড়, কাচারী বাজার জিরো পয়েন্ট, মেডিকেল মোড়, সাতমাথা মোড়, মাহিগঞ্জ, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রোডে প্রতিদিনই কোনো না কোনো সময় যানজটে আটকা পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। 

রংপুর নগরীর প্রধান-প্রধান সড়কগুলোর দুধারের পুরোটাই অটোরিকশা আর হকারদের দখলে চলে গেছে।এসব অবৈধ অটোরিকশার দখলমুক্ত করতে কাজ করছেন প্রশাসন।

নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার গফুর উদ্দিন,সাজু মিয়া জানান,রংপুরে এখন হাজার হাজার অটোরিকশা চলছে। শহরের পাশাপাশি পাশের উপজেলাগুলো থেকেও এখানে অটোরিকশা আসছে ভাড়া মারতে। প্রতিদিন নগরীর প্রধান সড়কসহ অলিগলির সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।বাসা থেকে বের হয়ে ভালোভাবে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।তবে রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ চাইলে সব কিছু করতে পারে। কিন্তু তারা সমস্যা নিরসনের জন্য কিছু করছে না।এমনি পুলিশ কাজ করছেন দায়সারা।

রংপুর বণালী বেগম,শ্যামলী,জানান,‘নগরীর অধিকাংশ অটোরিকশার চালক অদক্ষ ও অযোগ্য। বেপরোয়া অটোরিকশার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। যা সিটি কর্পোরেশনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখেও না দেখার ভান করে যাচ্ছে। এসব চালকরা যন্ত্রতন্ত্র ভাবে যেখানে সেখানে পাকিং করছেন।এর ফলে দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট।

রংপুর জেলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক শ্রমিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার কবির সুমন বলেন,‘অবৈধ অটোরিকশা কমাতে আমরা একাধিকবার সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেছি।কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশার নগরীতে পরিণত হয়েছে রংপুর মহানগরী।এখন মেয়র,আর ট্রফিক পুলিশ নেই।এ কারনে  বাহির থেকে অবৈধ কাগজ নেই সেই সব অটো নগরীতে ঢুকছে।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তা হাসান গোর্কি বলেন,‘রংপুরে অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রয়েছে। নতুন করে আর কোনো লাইসেন্স ইস্যু হয়নি। বিগত সময়ের দেয়া ৫ হাজার ৮০০ লাইসেন্সই বহাল রয়েছে।২০১২ সালে সিটি কর্পোরেশনের  অনুমোদন দেন সরকার।এর আগে গঠন করা ছিল পৈীরসভা।সিটি কর্পোরেশনের জনসংখ্যা ৮ লাখের বেশি।সাধারন মানুষের দাবি অবৈধ অটো রিক্সা অপসরন করে যানজট মুক্ত নগরীর ।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান,‘নগরীতে অবৈধ অটোরিকশার চলাচল বন্ধে আমার সময় বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করার আগেই চলে আসতে হলে।আমি মনে করি প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই অবস্থার পরিবর্তন করবেন।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসন ও সিনিয়র সহকারী সচিব জয়শ্রী রানী রায় জানান -দীর্ঘদিন ধরে চলছে এসব অবৈধ অটো রিক্সা।এসব অটো রিক্সার বিরুদ্ধে চলছে অভিযান।তিনি বলেন অতি দ্রুত রংপুর নগরী থেকে অপসরন করা হবে অবৈধ অটো রিক্সা গুলো।যে সব অটোর বৈধ কাগজপত্র দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন সে গুলো ছাড়া অবৈধ অটোর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো:সায়ফুজ্জামান ফারকী জানান,‘মহানগরীরতে অবৈধ অটোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।আর ফুটপাত দখলমুক্তসহ যানজট নিরসনে আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনায় কাজ করছি।নগরীতে অবৈধ যানবাহনের প্রবেশ নিষেধ ও দখলে রাখা ফুটপাত পথচারীদের ব্যবহারে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।তবে অতিদ্রুত যানজট মুক্ত নগরী হবে রংপুর।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo