• অপরাধ ও দুর্নীতি

মা‌নিকগ‌ঞ্জে বাক্সবন্দি বৃদ্ধার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মূল আসামি গ্রেফতার

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:১৩:২১

ছবিঃ সিএনআই

মা‌নিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জের সিংগাইরে হায়াতুন নেছা নামের বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় তার পুত্রবধূর পরকীয়া প্রেমিক সবুজ মিয়াকে গ্রেফতার করেছে সিংগাইর থানা পুলিশ। শ‌নিবার (২৬ অ‌ক্টোবর) দুপু‌রে মা‌নিকগঞ্জ পুলিশ সুপার (এ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোঃ বশির আহমেদ এক সংবাদ বিজ্ঞ‌প্তির মাধ‌্যমে বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

সংবাদ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে জানা‌নো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (২২ অ‌ক্টোবর) মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরের কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সম্পৃক্ত মূল আসামী কে গ্রেফতার ক‌রে পু‌লিশ। গ্রেফতারকৃত মোঃ সবুজ মিয়া (২৬) টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর খামারপাড়া গ্রা‌মের মৃত নূরুল ইসলাম এর পুত্র। সে বর্তমা‌নে বাসা নং-১০/১, রোড নং-৫, ব্লক বি, মিরপুর ১৩ , থানা কাফরুলে থাক‌তো।

গ্রেফতা‌রের পর সবুজ আদাল‌তে নিজেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ব‌লে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।প্রেস বিজ্ঞ‌প্তি‌তে আরও জানা‌নো হয়, মা‌নিকগ‌ঞ্জের সিংগাইর নয়াডাঙ্গী সাকিনস্থ সৌদি প্রবাসী আ: খালেকের স্ত্রী রুনা বেগমের পরকিয়া সংক্রান্ত চলমান পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ৫ অ‌ক্টোবর রুনা বেগম (২৫), রেনুকা বেগম (৫০) ও  সবুজ (২৬) এবং অজ্ঞাতনামা আসামীরা পরষ্পর যোগসাজশে বসতবাড়ীর একতলা বিল্ডিং এর পশ্চিম পার্শ্বে প্রবাসী আঃ খালেক এর মা হায়াতুন নেছা ওরফে আয়াতুনের শয়ন কক্ষে তাকে শ্বাসরোধ করে কিংবা অন্য কোন উপায়ে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে উক্ত কক্ষের ভিতর থাকা স্টীলের বড় বাক্সের ভিতরে লাশ লুকিয়ে বাক্সটি তালা দিয়ে রাখে। উক্ত ঘটনায় নিহ‌তের এর ভাতিজা মো: নিয়ামদ (৩৮) বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার মামলা রুজু হয়। 

মামলা রুজু হওয়ার পর মানিকগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ বশির আহমেদ (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নাতিপ্রাপ্ত) এর দিক নির্দেশনায় সুজন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), মানিকগঞ্জ এর তথ্য প্রযুক্তিগত সহায়তায় মোঃ নাজমুল হাসান সিনিয়র এএসপি, সিংগাইর সার্কেল, এবং অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, বিপিএম, পিপিএম,  সিংগাইর থানার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগীতায় মামলার পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) সাদেকুর রহমান মামলা রুজুর দিন মামলার ১নং আসামী রুনা বেগম সহ তার মা ২নং আসামী রেনুকা বেগমদ্বয়কে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে।

১নং আসামী রুনা বেগম পরকিয়া প্রেমিক সবুজ এর নাম প্রকাশ করে প‌রে গ্রেফতা‌র করা হয় সবুজ‌কে। এর আ‌গে ২৩ অ‌ক্টোবর বর্ণিত আসামী সবুজকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ২(দুই) দিনের পুলিশ রিমান্ডে প্রাপ্ত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে যে, রুনাকে প্রেমের জালে জড়াতে সবুজ কাল্পনিক আধ্যাত্মিক হুজুর (অদৃশ্য) এর রুপ ধরাসহ বিভিন্ন কৌশল করে এবং হুজুরের বেশ নিয়ে সবুজ নিজেই রুনার শাশুড়ীকে হত্যা করে গুম করার উদ্দেশ্যে বাক্সের ভেতর লাশ লুকিয়ে রাখে। মূলত হত্যাকাণ্ডের শিকার শাশুড়ীর জন্য সবুজ তার পরকীয়া প্রেমিকা রুণার সাথে মিলিত হতে পারত না।

ঘটনার দিন সবুজ রুনাকে বলে যে তার কাছে থাকা অদৃশ্য আধ্যাতিক হুজুর সন্ধ্যায় সবুজের রুপ ধরে রুণার শাশুড়ীকে বোতলবন্দী করতে যাবে। এরপর হুজুররুপী সবুজ সন্ধ্যায় রুণার বাড়িতে পৌছালে রুণা কলাপ্সিবল গেট খুলে দেয়। সবুজ ভেতরে ঢুকে নিহত আয়াতুনকে মেঝেতে বসা অবস্থায় পায় এবং পেছন থেকে নাকসহ মুখ সজোরে চেপে ধরে। এ ভাবে আনুমানিক ৫ মিনিট চেপে ধরে রাখলে আয়াতুন খাতুন নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে সবুজ লাশ গুম করার জন্য একই ঘরে থাকা স্টিলের বাক্সের মধ্যে লাশ লুকিয়ে ফেলে তালা মেরে দেয়।

পরবর্তীতে সবুজ পাশের ঘরে থাকা প্রেমিকা রুনাকে বলে আমি (আধ্যাতিক হুজুর) তোমার শাশুড়ীকে বোতল বন্দী করে নিয়ে যাচ্ছি, কিচ্ছুক্ষণ পরে প্রেমিক সবুজ আসবে বলে চলে যায়। পরবর্তীতে সবুজ আবার এসে তার প্রেমিকার সাথে রাত্রিযাপন করে। গ্রেফতা‌রের পর আসামি সবুজকে ২৫ অ‌ক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করলে আসামী স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলা তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে ব‌লে জানা‌নো হয় প্রেস বিজ্ঞ‌প্তি‌তে।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo