• শিক্ষা

লক্ষণ দেখেই চেনা যাবে কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুঃ বাকৃবি অধ্যাপক 

  • শিক্ষা
  • ১৩ জুন, ২০২৪ ১৫:০৮:৪৮

ছবিঃ সিএনআই

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহঃ আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিভিন্ন ধরনের পশু কোরবানি করবেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ মুসলমান কোরবানিতে পশু হিসেবে গরুকেই পছন্দের শীর্ষে রাখেন।

এই সুযোগকে কাজে লাগায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে স্টেরয়েড জাতীয় হরমোন প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে তারা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা অসুস্থ গরু চিনতে গবেষণাগারে পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। লক্ষণ দেখেই গরুগুলো চেনা যাবে। সুস্থ গরুর লক্ষণ গুলো ঠিক অসুস্থ গরুর বিপরীত। 

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ডেক্সামেথাসন, ওরাডেক্সন, প্রেডনিসোলন জাতীয় ঔষধ সেবন করিয়ে অথবা ডেকাসন, ওরাডেক্সন স্টেরয়েড জাতীয় ইনজেকশন দিয়ে গরুকে মোটাতাজা করা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের হরমোন যেমন ট্রেনবোলন, প্রোজেস্টিন, টেস্টোস্টেরন প্রয়োগ করেও গরুকে মোটাতাজা করা হয়।

অসাধু পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা এসব গরুর মাংস খেলে মানব শরীলে হতে পারে নানা ধরনের রোগ। অধ্যাপক বলেন, কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা অসুস্থ গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে পানি জমে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, মূত্রনালি ও যকৃতের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

কোরবানির হাটে গেলে সহজেই কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা অসুস্থ গরু  চিহ্নিত করা যাবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু ঘন ঘন শ্বাস নিবে। গরুর দেহ থলথলে থাকবে এবং দেহে পানির পরিমাণ বেশি বোঝা যাবে । গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস দেবে যাবে এবং আগের অবস্থায় ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে। গরুর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি থাকবে।কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু খাবার খেতে চাইবে না বরং ক্ষুধামন্দার লক্ষণ দেখা দিবে। নিয়মিত জাবর কাটবে না।  অসুস্থ গরুর মুখ থেকে অতিরিক্ত লালা পড়তে থাকে এবং এই লালা ফেনাযুক্ত ও হতে পারে অথবা ফেনা ছাড়াও হতে পারে। ইনজেকশন দেওয়ায় গরুর রানের মাংস স্বাভাবিক গরুর রানের মাংসের চেয়ে অনেক নরম থাকে। নাকের উপরের অংশ বা মাজেল শুষ্ক থাকবে। বেশি পানি জমার কারণে গরু সহজে হাঁটতে চায় না এবং এক জায়গায় বসে থাকে। একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাবে। সর্বদা ক্লান্ত দেখাবে। গরুর হাঁড় খুবই নরম থাকবে। দুর্ঘটনাবশত যদি গরুটি পরে যায়, তাহলে তার হাঁড় ভেঙে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

সুস্থ গরুর লক্ষণ সম্পর্কে ওই অধ্যাপক বলেন, সুস্থ গরুর গায়ের রঙ চকচকে থাকবে, কুঁজ মোটা থাকবে, চামড়া টানটান থাকবে, গরুর গায়ে স্পর্শ করা হলে প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। সুস্থ গরুর নাকের ওপরের অংশ ভেঁজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। সুস্থ গরুর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে।তবে সুস্থ গরুর ক্ষেত্রেও যখন অনেক দূর থেকে হাঁটিয়ে হাটে নিয়ে আসা হয় তখন শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু তা এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। খাবার দেখলেই খাওয়ার আগ্রহ দেখাবে। নিয়মিত জাবর কাটবে।গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকবে।  

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo