
নিউজ ডেস্কঃ মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক সফরসঙ্গীদের ওপর পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের ন্যাক্কারজনক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রদূত আনসারী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, জুলাই আন্দোলনের একবীর সেনানী এবং একজন নারী রাজনৈতিক নেত্রীর ওপর জঙ্গি কায়দায় হামলে পড়া, নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন আমলে নেবে।’
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের ওপর যে নিন্দনীয় আক্রমণ চালানো হয়েছে, তা আমাকে ভীষণভাবে ব্যথিত করেছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের এই সময়টা নিরাপত্তার দিক থেকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে আসা বাংলাদেশের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় পতিত স্বৈরাচারের সমর্থকদের হাতে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আমি নিশ্চিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার সহকর্মীরা এসব ব্যাপার সামনে রেখেই তাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন। কিন্তু আমার কাছে অনেকে জানতে চেয়েছেন— বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল কিনা?’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে লড়াই করেছি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য, আর আজ এমন সময়ে এসে যদি আমাদের নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না যায়—তাহলে সেটি কেবল অবহেলা নয়, ইতিহাসের কাছে এক অমার্জনীয় ব্যর্থতা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই হামলা শুধু ব্যক্তির ওপর নয়, এটি বাংলাদেশের মর্যাদা, আমাদের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার এবং একটি নতুন পথচলার ওপরও হামলা।’
এদিকে স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক থেকে এক ভিডিও বার্তায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার গুলি-বুলেটকে বিন্দুমাত্র ভয় পাইনি, ভাঙা ডিমে কিছুই আসে যায় না।
আখতার হোসেন বলেন, নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে নামার পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হুংকার দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তারা এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এটাই আওয়ামী লীগের প্রকৃত চরিত্র।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট স্থানীয় সময় দুপুরে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। কিছুটা দেরিতে বিমানবন্দর থেকে বের হলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির; এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারাকে ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এবং কয়েকজন বিএনপির কর্মী তাদের নিরাপত্তা দিয়ে বের করার চেষ্টা করেন। এ সময় আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়েন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন কর্মী। তাসনিম জারাকেও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন তারা। প্রতিবাদে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগান তোলেন আখতার। পরে পুলিশের সহযোগিতায় গাড়িযোগে বিমানবন্দর এলাকা ছাড়েন তারা। প্রসঙ্গত: জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে যোগদানে গেছেন তারা।
মন্তব্য (০)