
গাইবান্ধা প্রতিনিধি : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে গাইবান্ধা সদর ২ আসনটিতে জমে উঠেছে ভোটের মাঠ। এক সময় জাতীয় পার্টির দূর্গ বলা হতো এই আসনকে।১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে এই আসনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুর রশীদ সরকার। তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা হাতছাড়া করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহাবুব আরা বেগম গিনি কাছে। তিনি নবম দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে শাহ সারোয়ার কবির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর এই আসনে নতুন করে ভোটের চিত্র পাল্টাতে শুরু করে। এবারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটের হাওয়া এখন ভিন্ন। এই আসনে এবার মুল প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতের মাঝে।এই দুই দল ছাড়াও গণঅধিকার পরিষদ,ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থীরা কাজ করছেন মাঠে।তবে রাজনৈতিক সমীকরণে তাকিয়ে আছে জাপা,জাসদ,কমিউনিস্ট পার্টি সহ আরো কয়েকটি দল।
এই আসনটিতে প্রথমবারের মতো জয় পেতে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে কেন্দ্রে দিকে তাকিয়ে আছেন একাধিক প্রার্থী।তবে ধানের শীষের মনোনয়ন দৌড়ে সম্ভাব্য কয়েকজন এর নাম ইতোমধ্যে শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনিসুজ্জামান খান বাবু, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল আউয়াল আরজু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন নব্বী টিটুল, বিএনপি নেতা এটিএম মাজেদ হাসান লিটন,জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি হামিদুল হক ছানা,বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম সহ আরো কয়েকজন। তারা ইতোমধ্যে উঠান বৈঠক সহ বিএনপি ৩১ দফা বাস্তবায়নে সাধারণ ভোটারদের মাঝে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল আউয়াল আরজু বলেন, বিএনপি হচ্ছে নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনের জন্য বিএনপি সবসময় প্রস্তুত। সংগঠনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন ইউনিটে কাউন্সিল হচ্ছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছি। তবে ভোটের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। শুধু হাইকমান্ডের নির্দেশনার অপেক্ষা।সেই সঙ্গে দল যাকেই নমিনেশন দেখ ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবো।
অন্যদিকে প্রথমবারের মতো এই আসনটিতে জয় পেতে বসে নেই জামায়াতে ইসলামী। তারা আগে থেকেই আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে। এরিমধ্যে একক প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের আমীর মো আব্দুল করিম কে।তাকে ইতোমধ্যে অনেকটা শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে ধরে নিয়েছেন অন্য দল গুলো।
জেলা জামায়াতের আমীর মো আব্দুল করিম একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, বিগত সরকার প্রহসনের তিনটি নির্বাচন করেছে- জনগণের সঙ্গে তামাশা করেছে- জনগণকে প্রাধান্য দেয়নি। আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার নির্বাচনের একটি উত্তম পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হবে।পাশাপাশি নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।কারণ মানুষ জামায়াত কে গ্রহণ করেছে।
তবে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যাশা বেকারত্ব দূরীকরণ শিক্ষা সাংস্কৃতিক ও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে যে কাজ করবে তাঁরাই পাবেন এবারে ভোট। এই আসনে ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৩৮ জন ভোটারের প্রত্যাশা অবহেলিত পিছিয়ে পড়া গাইবান্ধার উন্নয়ন।
মন্তব্য (১)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আমরা সৎ ও এলাকার উন্নয়ন করবে এমন নেতা নির্বাচন করতে চাই।