• সমগ্র বাংলা

চিলমারীতে আশ্রয়ণের ঘর দখলের উৎসব

  • সমগ্র বাংলা

ছবিঃ সিএনআই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীর চরাঞ্চলে গৃহহীনদেন জন্য নির্মিত আশ্রয়ণের ব্যারাক হস্তান্তরের আগেই দখল নিতে মরিয়া স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গৃহহীন পরিবারের জন্য ব্যারাকের ১টি করে রুম বরাদ্দের কথা থাকলেও স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা ওবাইদুল ইসলাম ওয়াল ভেঙ্গে ১টি ব্যারাকের ৫টি রুম দখল করাসহ ঘর তুলে জায়গা দখলে নেয়ায়, শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
‎ওবাইদুল হক প্রভাবশালী এবং এলাকার জোদ্দার ব্যাক্তি জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, এটি তার দ্বিতীয় স্ত্রি’র জন্য দখলে নিয়েছেন। ওবাইদুল হক চিলমারী ইউনিয়নের বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব পরিচয় দিয়ে ওয়াল ভাঙ্গান বিষয়টি ভুল স্বীকার করেন। শুধু ওবাইদুল ইসলাম নয় বেশ কয়েকজন প্রভাব কাজে লাগিয়ে ইতি মধ্যে একটি করে ব্যারাক দখল করে পুরো ব্যারাক ঘিরে নিয়েছেন।
‎জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা বিভিন্ন চরাঞ্চলের মত চিলমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনে নিঃস্ব হওয়া গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধিনে আশ্রয়ণে ব্যারাক নির্মান করা হয়। ধারবাহিকতায় চিলমারী ইউনিয়নের মধ্য কড়াইবরিশাল একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩৫টি ব্যারাক নির্মান করা হয়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫বছর আগে নির্মান কাজ শেষ হলেও অজ্ঞাত কারনে এখনো হস্তান্তর করা হয়নি ব্যারাকের ঘর গুলো। ইচ্ছা মতো যে যার মতো রুম ব্যবহার করলেও ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ওয়াল ভেঙ্গে একটি ব্যারাকের ৫টি রুমসহ নতুন করে ঘর তৈরি করে আশ্রয়ণের জায়গাও দখল করে নেয়ায় অভিযোগ উঠছে বিএনপি নেতা ওবাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সরেজমিন বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেলে এর সত্যত্বা পাওয়া যায়। তবে, না প্রকাশে অনেকে মন্তব্য করেছেন দলীয় প্রভাবেই এ কাজ তিনি করেছেন।
‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তত্বাবধানে মধ্য-কড়াইবরিশাল আশ্রয়ন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। এতে করে ৩৫ ব্যারাকে ১৭৫ টি পরিবার থাকার উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছিল। বছরের পর বছর পার হলেও প্রশাসনের পক্ষ হতে এখনো এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করা হয় নি। এর আগেই ওই বিএনপি নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি পরিবার ব্যারাক দখল করে পাঁচ পরিবারের পরিবর্তে একাই থাকছেন।
‎স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক মিয়ার স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, আমাদের থাকার জায়গা নাই। তাই আমরা দুইটা ঘর নিয়েছি, মানুষ আসলে একটা ছেড়ে দিব।
‎ইউপি সদস্য এরশাদুল হক বলেন, এখনো আশ্রয়ন ঘর গুলো হস্তান্তর করা হয়নি এর মধ্যে সব দখল করা শেষ। আর ওবাইদুল যে কাজটা করছে এটা মোটেও উচিৎ নয়, তিনি এই ভাবে ঘরের দেয়াল ভাঙ্গতে পারে না। এসময় তিনি আশ্রয়ণ ব্যারাক গুলো দ্রুত হস্তান্তরের জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
‎অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবাইদুল ইসলাম বলেন, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য এই ব্যারাক নিয়েছেন, এছাড়াও তিনি কক্ষের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলার কথা স্বীকার করে জানান, পাঁচ-সাত দিন হয়েছে দেয়াল ভাঙ্গা হয়েছে। তবে দেয়াল ভাঙ্গার বিষয়টি ভুল করেছেন বলে স্বীকার করেন। চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়নি, এছাড়াও কেউ ঘর দখল করে চারদিক ঘেরার সুযোগ নেই।
‎ওবায়দুল ইসলাম বিএনপি করে বিষয়টি নিশ্চিত করে চিলমারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আবু হানিফা জানান, কেউ অন্যায় করে থাকলে তার শাস্তি হবে।
‎চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য (০)





  • company_logo