
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে এক শিশু শিক্ষার্থী স্কুলছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে কোল্ড ড্রিংকস এর সাথে ঔষধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ধর্ষণের একটি ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণকারীরা। এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে শিশু শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেছে অভিযুক্তরা। তবে শেষ রক্ষা পায়নি শিশুটি, বখাটে ধর্ষণকারীরা শিশু শিক্ষার্থীর আপত্তিকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এ ঘটনায় রবিবার(১০ আগস্ট) রাতে ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর বাবা চারজনকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থী (১১) উপজেলার কাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের কাওরাইদ গ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম (৩৫), জসিম উদ্দিন (৩০), মো. বাবুল মিয়া (২৫) ও সাব্বির আহমেদ (২০)।
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর বাবার দেওয়া থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। গত দুই সপ্তাহ পূর্বে শিশুটি স্কুলছুটি হওয়ার পর বাড়িতে রওনা হয়৷ পথিমধ্যে বৃষ্টি তাড়া করলে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেয় শিশুটি। সেখানে বখাটের দল শিশু শিক্ষার্থীকে দেশীয় অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে কোল্ড ড্রিংকের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে। অজ্ঞান অবস্থায় শিশুটিকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। পুরো ঘটনার একটি ভিডিও মুঠোফোন ধারণ করে অভিযুক্তরা। এরপর শুরু হয় তাদের নোংরা খেলা। আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তবুও শিশু শিক্ষার্থী রক্ষা পায়নি। শেষে অভিযুক্তরা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এরপর শিশুটি তার স্বজনদের নিকট বিষয়টির বিস্তারিত জানায়।
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থী বলেন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বৃষ্টি তাড়া করে। রাস্তার পাশে একটি দোকানে আশ্রয় নেই আমি। তখন দোকান বন্ধ ছিলো। এরপর ওঁরা আমাকে সেভেনআপ খেতে দেয়। আমি খেতে চায়নি। কিন্তু ওঁরা ভয়ভীতি দেখায়। খাওয়ার পরপরই আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। আর কিছু বলতে পারবো না। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি জঙ্গলের ভেতর একজন মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করছে। আমি ভিডিও করতে বাঁধা দেই কিন্তু তবুও ওঁরা ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে এই বলে হুমকি দেয় এরপর ডাকলে না আসলে ভিডিও ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিবো। এভাবে একাধিকবার আমাকে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। তাদের সবার পরিচয় আমি জানি। তবুও এদের হাত থেকে আমার শেষ রক্ষা হয়নি। আমার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমার মৃত্যু ছাড়া কোন পথ খোলা নেই।
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, বাবা হিসেবে আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারবো না। ভিডিও দেখে আমার মাথা কাজ করছে না। আমার ছোট্ট মেয়েটার সঙ্গে কেমন জুলুম করলো ওঁরা। আমি সমাজে মুখ দেখাবো কি ভাবে। মেয়েটাকে নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। চোখে চোখে রাখছি কখন জানি কি করে বসে। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি। এরপর থেকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা। মরা ছাড়া আমাদের কোন পথ খোলা নেই।
অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে পরপর কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, এ ঘটনায় শিশু শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন । ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য (০)