
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় শত বছরের পুরোনো একটি সরকারি খাল ভরাট করে ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে। শুধু প্রবাসী নয় কয়েক বছর ধরে পুরোনো ওই খালটি যে যার মতো করে দখল করে ভরাট করছে। খালটি দখলের মহোৎসব চলছে।
উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের বাগবাড়ি শিমুলিয়া খালটিতে সম্প্রতি মাটি ফেলে ভরাট করছে বাগবাড়ি গ্রামের মৃত মজিবর এর পুত্র প্রবাসী আবুল হোসেন। শুধু আবুলই নয় তার মতো বাগবাড়ি এলাকার আরও কয়েকজন মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেছে সরকারি খালটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছে, সরকারি খালটি ভরাটের ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত খাল পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, স্থানীয় ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ম্যানেজ করে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ভাবে খালটি ভরাট করে দখলদাররা তাদের ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করেছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে বাগবাড়ি শিমুলিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বাগবাড়ি খালটি যে যার মতো করে দখল করে ভরাট করে ফেলেছে। বর্তমানে প্রবাসী আবুল খালটি মাটি ফেলে ভরাট করে তার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করেছে। এ ছাড়াও আরও কয়েকজন খালটি ভরাট করে দখল করে ফেলেছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বাগবাড়ি খালটি ভরাটের ফলে কৃষিজমিতে একদিকে জলাবদ্ধতা ও অপর পাশে সেচের মারাত্নক সমস্যা হচ্ছে। দিন দিন খালটি ভরাটের কারনে দীর্ঘদিন ধরে এই খালে পানি প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। সরকারি খালটি দখলের প্রতিযোগীতা চললেও প্রশাসন বাধা দেওয়া অথবা খাল দখল ও ভরাট বন্ধের কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না।
স্থানীয় কৃষক পরশ আলী জানায়, বাগবাড়ির এ খালটি দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো। বর্তমানে খালে বর্ষার পানি আসে না। খালটি ভরাট করে স্থানীয়রা যার যার মতো রাস্তা তৈরি করছে। এখন খালটির যে অংশ ভরাট হয়টি সেখানে শুধু বৃষ্টির পানি জমা হয়।
প্রবাসী আবুলের পুত্র সামির হোসেন জানায়, তারা বাড়িতে চলাচলের সুবিধার জন্য খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি করেছে। খাল ভরাটের সময় প্রথমে বাধা দেওয়া হলে তার বাবা ইউনিয়ন ভূমি অফিসসহ এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে নিয়েছে। তার পর তারা খালে মাটি ফেলে ভরাট করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: আরিফ হোসেন জানায়, খালটি দখল করে অনেকে ভরাট করে ফেলেছে। খাল ভরাটে বিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় দখল অব্যাহত রয়েছে।
বালিয়াটি ইউনিয়ন উপ সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) কে এম ইমরান জানায়, খাল দখলের বিষয়টি তার জানা নেই। আর দখলদাররা মাটি ভরাটের পূর্বে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কোন কথা বলেনি। আর সরকারি খাল ভরাট করার অনুমোতি দেবার এখতিয়ার তার নেই।
সাটুরিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমদ জানায়, বাগবাড়ি এলাকার সরকারি খাল দখলের বিষয়ে অবহিত রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে খাল দখল ও ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য (০)