
কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে দু"শতাধিক মালয়েশিয়াগামী উদ্ধার ঘটনায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সেন্টমার্টিন বিসিজি ষ্টেশনের চীফ পেটি অফিসার আহাম্মদ আলী মিয়া বাদী হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে।
ইতিমধ্যে এ মামলায় পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া গ্রামের মৃত সমসু মিয়া"র ছেলে মোঃ রাসেল (২২), হ্নীলা ইউনিয়ন নাটমুড়া পাড়ার আমীর হোসেন"র ছেলে জসিম (২২), উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ডেইল পাড়ার কামাল উদ্দিন"র ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৮), উখিয়া উপজেলার ১৫ নং জামতলী ক্যাম্পের এইচ/০৩ ব্লকের মোঃ ইয়াছিন"র ছেলে ধলূ মিয়া (২৯),
মৃত হোসেন"র ছেলে ইমাম হোসেন (৩৮), মৃত জসিম উদ্দিন"র ছেলে সেলিম উল্লাহ (৩৯),
ডি/৯ ব্লকের মৃত আমিন উল্লাহ"র ছেলে মোঃ আলম (২৫), এইচ/১৫ ব্লকের মৃত আবুল নসর"র ছেলে ওমর ফয়সাল (৩৭), মৃত আবদু"র ছেলে মহিব উল্লাহ (৩০), মোঃ হোসন"র ছেলে মোঃ জোহার (৩০), ই/১৪ ব্লকের মোঃ ইদ্রিস"র ছেলে মোঃ রফিক (২০), এইচ /১২ ব্লকের রশিদ আহমদ"র ছেলে মোঃ আরিফ (২০)।
টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন ইউপিস্থ ছেরাদ্বীপের পূর্ব পাশে বঙ্গোপসাগরে।
৮ এপ্রিল রাত পৌনে ৭ টার সময় এম ভি কুলসুমা নামের ইঞ্জিন চালিত কাঠের বোটসহ
১২ জন মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য ও গ্রেফতার ও ২০৯ জন ভিকটিম উদ্ধার
করা হয় । উদ্ধার হওয়াদের ৪২ জন বাংলাদেশী পুরুষ, ৬৭ জন পুরুষ, ৭২ মহিলা ও ২৮ জন শিশুসহ ১৬৭ জন মিয়ানমার নাগরিক (রোহিঙ্গা) বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো:গিয়াস উদ্দীন।
তিনি জানান, মামলার বাদী আহাম্মদ আলী মিয়া (৫১) কোস্টগার্ড সদস্যসহ ৮ এপ্রিল অনুমান বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় বিসিজি স্টেশান সেন্টমার্টিন কর্তৃক টহল পরিচালনা করার সময় দেখতে পান যে, ১টি পুরাতন ইঞ্জিন চালিত কাঠের বোট দিয়ে কিছু লোকজন অবৈধভাবে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলো। উক্ত বোটটির গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গীয় ফোর্স সহ তাহাদের পিছু নিলে উক্ত বোটটি সোয়া সন্ধ্যা ৬ টার সময় সেন্টমার্টিন ইউপিস্থ ছেরাদ্বীপের পূর্ব পাশে আটক করেন। পরবর্তীতে বাদী সঙ্গীয় কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহায়তায় ইঞ্জিন চালিত কাঠের বোটে থাকা লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন যে, ধৃত আসামীগণ তাহাদেরকে অবৈধভাবে বাংলাদেশ হতে মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছিলো। মানব পাচারের শিকার হওয়া সর্বমোট ২০৯ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ হেফাজতে নেন। পরবর্তীতে জানা যায়,
আসামীগণ পরষ্পর যোগসাজসে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের চলমান জাতিগত সংঘাত এবং আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবন-যাপন, অধিক বেতনে চাকুরী ও অবিবাহিত নারীদেরকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা ও ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে যৌন নিপীড়ন, প্রতারণামূলক বিবাহ ও জবরদস্তিমূলক শ্রমসেবা আদায় এর অভিপ্রায়ে অবৈধভাবে সাগরপথে ইঞ্জিন চালিত কাঠের নৌকা যোগে বাংলাদেশ হতে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। তাই
ভিকটিমদের অবৈধভাবে নৌকাযোগে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ হতে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে নিয়ে এসে ২০১২ সালের মানব পাচার আইনের ৭/৮/৯/১১ ধারার অপরাধ করায় আসামীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানার মামলা রুজু করা হয় এবং ৩০ লাখ টাকা মূল্যের এম ভি কুলসুমা নামের
১টি পুরাতন ইঞ্জিন চালিত কাঠের বোট জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি মো: গিয়াস উদ্দীন।
মন্তব্য (০)