
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই এগুচ্ছে ভয়াবহতার দিকে। এরই মধ্যে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, দ্রুতই সীমান্তের দিকে বড় হচ্ছে পাকিস্তানি সেনাদের বহর। তাদের আশঙ্কা, ভয়ংকর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান।
উদ্ভুত এমন পরিস্থিতিতে করণীয় এবং নিজেদের সক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য তিন বাহিনীর প্রধান, নিরাপত্তা পরামর্শক এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শনিবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্ণেল সোফিয়া কোরেশি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের সেনাদের সম্মুখ অভিযানে (সীমান্তে) আনছে। এর অর্থ, উত্তেজনা আরও বাড়াতে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
তবে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভয়ংকর যেকোনো পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
সোফিয়া বলেন, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে প্রস্তুত আছে। পাকিস্তানের সব ধরনের বৈরিতার জবাব সফলভাবে দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনা বৃদ্ধিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে প্রতিশ্রুতি, তা মোকাবিলার সক্ষমতা ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর রয়েছে।
উল্লেখ্য, সবশেষ শুক্রবার (৯ মে) মধ্যরাতেও পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটিতে একযোগে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। এর কিছুক্ষণ পর পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে। ভারতের বিরুদ্ধে চলমান পাল্টা অভিযানের নামও ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে তারা। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর পাল্টা জবাবে শুরু পাকিস্তানের এ অভিযানের নাম রাখা হয়েছে ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’, যার অর্থ সীসাঢালা প্রাচীর।
এ অভিযানের আওতায় জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরের বিয়াস এলাকায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্রের মজুতাগার রয়েছে সেখানে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। ফাতাহ-১ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করে ভারতের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়।
‘ব্রহ্মস’ মূলত ভারতের সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। সামরিক যান, সাবমেরিন ও জাহাজ থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা যায়। ছোড়া যায় যুদ্ধবিমান থেকেও। ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র সর্বোচ্চ ৮০০ কিলোমিটার বা ৪৯৭ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
ভারতের ব্রহ্মপুত্র নদ ও রাশিয়ার মস্কভা নদীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে এ সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের নাম রাখা হয়েছে ব্রহ্মস।
এদিকে, শুক্রবার মধ্যরাতের হামলার কথা স্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও। পাকিস্তান তাদের নিরীহ মানুষের রক্তের বদলা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সমন্বিত শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে। ভারত যেসব সামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়েছে সেগুলো লক্ষ্য করেই পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে।
মন্তব্য (০)