• লাইফস্টাইল

অনেক কাজ একই সঙ্গে করা ভালো না খারাপ?

  • লাইফস্টাইল
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৫:৪২:৪০

সিএনআই ডেস্ক: কতগুলো কাজ একসঙ্গে করতে পারেন আপনি? খাওয়া, বই পড়া, সঙ্গে গান শোনার অভ্যাস আছে? রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ফোনে কথা বলা বা ম্যাসেজ করেন নিয়মিত? কিন্তু তার অর্থ কিন্তু এই নয় যে, আপনি মাল্টিটাস্কিং করতে পারেন। আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে পারে না। আর তাই, একই সঙ্গে কয়েকটি কাজ করতে গেলে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায়। প্রভাব পড়ে কাজের ওপরে। কেন আমরা একই সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে পারি না? ১। আমাদের মস্তিষ্কের গঠন মাল্টিটাস্কিং-এর জন্য উপযোগী নয় আমাদের মস্তিষ্ককে কোনো কাজ দিলে সে তার ঠিক আগের কাজটিকে স্থগিত রেখে পরেরটি করে। আর তাই, একই সঙ্গে দুটো কাজ করতে গেলে একবার আগের কাজ এবং একবার পরের কাজ- এভাবেই চলে মস্তিষ্ক। এজন্য দুটো কাজেই কিছু না কিছু ভুল থেকে যায়। মূলত, একই সঙ্গে দুটো কাজেই সমান মনোযোগ না দিতে পারায় এমনটা হয়ে থাকে। ২। আমাদের শেখার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় আমাদের মস্তিষ্ক এভাবেই গঠিত যে, এর প্রতিটি কাজের মধ্যে যে ছোট ছোট স্থানান্তর ঘটে সেটা আমরা বুঝতে পারি না। এই যেমন, পড়তে পড়তে যদি হুট করে আপনি ফোনে টেক্সট করতে শুরু করেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু মস্তিষ্কের কাজের ধরণ পাল্টাচ্ছে। যা আমাদের ওপরে বেশি চাপ ফেলে না। তবে আমাদের মস্তিষ্কের শক্তি এমন একই সঙ্গে কাজ করার এবং উভয় কাজ থেকেই শেখার জন্য উপযোগী নয়। এক্ষেত্রে সবসময় আমরা কিছু তথ্য ভুলে যাই, ছেড়ে যাই। নতুন অনেক কিছু শেখা থেকে বিরত থাকি। ৩। মাল্টিটাস্কিং সময় নষ্ট করে হয়তো আপনি সময় বাঁচানোর জন্য মাল্টিটাস্কিং করছেন। কিন্তু, গবেষণা অনুসারে, এই মাল্টিটাস্কিং-এর কারণেই একজন মানুষের ৪০ শতাংশ কর্মক্ষমতা কমে যায়। মস্তিষ্ককে একটি কাজ থেকে আরেকটি কাজের দিকে মনোযোগ দিতে এবং সেখানে থিতু হতে বেশ কিছু সময় লেগে যায়। তাই, সময়টাও বেশি লাগে। ৪। ভুলের পরিমাণ বেড়ে যায় যেমনটা আগে বলা হয়েছে, অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে গেলে মস্তিষ্ক কোনো কাজেই খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারে না। ফলে কাজে ভুলের পরিমাণ অনেকটা বেড়ে যায়। আর সেই ভুলটাও থেকে যায় আমাদের চোখের আড়ালে। ৫। স্মৃতিশক্তি কমে যেতে সাহায্য করে একটি কাজ থেকে অন্য একটি কাজে চলে গেলে আমাদের মস্তিষ্ক কোনো কাজেই খুব বেশি মনোযোগ ও সময় দিতে পারে না। মস্তিষ্ককেও তথ্য জমা করার জন্য কিছু সময় ব্যয় করতে হয়। সেটি না দিলে মস্তিষ্ক কোনো স্মৃতিই ঠিকভাবে জমা করতে পারে না এবং একটা সময় স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তিহীনতায় ভুগে থাকে। ৬। সৃজনশীলতা কমে আসে সৃজনশীল কিছু চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্কের অনেকখানি সময় ঠান্ডাভাবে ভাবার দরকার পড়ে। হুট করে আপনি যে কথাটি বলবেন, সেটার পেছনে কতটা যৌক্তিকতা রয়েছে তা ভেবে দেখার সময় আপনার মস্তিষ্ক পাবে না। তাই, খুব দ্রুত অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে চাইলে সৃজনশীলতাও কমে আসে। ৭। এই প্রক্রিয়াটি বারবার ঘটে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে, যে মানুষগুলো মাল্টিটাস্কিং করেন, তারা তা বারবার করে থাকেন। কারণ, এক্ষেত্রে মস্তিষ্ক বাড়তি ডোপামিন নিঃসরণ করে। মাল্টিটাস্কিং করতে গেলে মস্তিষ্ক নির্দিষ্ট কিছুতে লক্ষ্য না দিয়ে অনেক বেশি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আর এই অবস্থা একবার ঘটলে সেটিতে মস্তিষ্ক অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জিনিসটি বারবার ঘটতে থাকে। ৮। মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে আপনি একই সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করলে খুব দ্রুত মানসিক ও শারীরিকভাবে শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়াও, এটি বাড়তি উদ্বিগ্নতা তৈরি করতে পারে। মানসিক সমস্যার কথা বাদ দিলেও, শারীরিকভাবে এটি আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। গবেষণায় পাওয়া যায় যে, অনেক কাজ একসঙ্গে করার জন্যই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। এই যেমন- গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনে কথা বলা বা কফি পান করা বড় রকম সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, মাল্টিটাস্কিং করুন। তবে সেটা পরিমিতভাবে। এমন যেন না হয় যে, একই সাথে অনেকগুলো কাজ করতে গিয়ে কোন কাজই ঠিকভাবে করতে পারলেন না আপনি। একটি কাজ শেষ করে তারপরই অন্য কাজটি হাতে নিন। এতে করে আপনি যেমন মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন, তেমনই শারীরিকভাবেও ফুরফুরে লাগবে আপনার। সূত্র- মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo