• লাইফস্টাইল

মডেল মাহমুদ রিফাতের পহেলা বৈশাখ

  • লাইফস্টাইল
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২৪ ২১:০৩:০৯

ছবিঃ সিএনআই

বিনোদন ডেস্কঃ নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখের সকালে এই শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রায় সকল শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় বিভিন্ন রঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখ উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বছর ঘুরে আবারও বাংলা নববর্ষ দুয়ারে। আর বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব হলো বাংলা নববর্ষ। তাই এ দিনে দেশ-বিদেশের বাঙালিরা এক হয়ে মেতে ওঠেন বৈশাখী উৎসবে। উৎসবের পোশাকে থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ।

 বাঙালি বরাবরই উৎসব পাগল। তাই অন্যান্য উৎসবের মতো বৈশাখের পোশাক নিয়েও সবার থাকে আলাদা পরিকল্পনা। সাধারণত বৈশাখের পোশাকে লাল-সাদার আধিক্য থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে, অন্যান্য রঙের পোশাকও নববর্ষ উদযাপনে জায়গা করে নিচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের বৈশাখী পোশাকে পসরা সাজিয়েছে। পোশাকে থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সময়, প্রকৃতি, ঐতিহ্য।তিনি আরও বলেন, বৈশাখী উৎসবে ছেলেদের পাঞ্জাবিতে এবার থাকছে কাটিংযে বৈচিত্র্য, রঙের ভিন্নতা ও ডিজাইনে নতুনত্ব।

লাল-সাদার পাশাপাশি পাঞ্জাবিতে বাহারি রঙের ব্যবহার বেড়েছে। সুতি, সিল্ক ও হাফসিল্কের পাঞ্জাবির ওপর করা হয়েছে নানা ডিজাইনের নকশা। পাঞ্জাবি ছাড়াও ছেলেদের জন্য পাওয়া যাবে শার্ট ও টি-শার্ট। শার্ট-শার্টের প্যাটার্নে নতুনত্ব থাকছে এবার। আছে চিত্রকলার মোটিফে প্রিন্টেড শার্ট। টি-শার্টেও চিত্রকলার ছাপচিত্র ফুটে উঠেছে।বৈশাখের শাড়ি হিসেবে ব্লক, অ্যাপ্লিক ও এমব্রয়ডারির নকশা করা লাল-সাদা শাড়ি নারীদের বেশি পছন্দ।

তবে, অন্য রঙের শাড়িও কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া সামনে ঈদ, তাই দুটি উৎসবকে সামনে রেখে এবছর ফ্যাশন হাউসগুলো শাড়ি নিয়ে কাজ করেছে। বৈশাখের শাড়িতে পুরনো শীতল পাটি, প্রাচীন স্থাপনা, জামদানির ছাপ ফুটে উঠেছে। নকশায় কাঁথা ফোঁড়, জ্যামিতিক ও ফুলেল  মোটিফ, হারিকেনের ছাপা, পাখির ছাপচিত্র প্রাধান্য পেয়েছে। সালোয়ার কামিজের ক্ষেত্রে হাতার ডিজাইনে নতুনত্ব থাকছে।

পাওয়া যাবে বেল স্লিভ, ট্রামপেড স্লিভের পোশাক। নেক লাইনে চিক নেক, বোল্ড নেক পাওয়া যাচ্ছে। আলাদাভাবে ব্লাউজও পাওয়া যাবে। গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে হাতাকাটা বা ছোট হাতার ব্লাউজই এনেছে বেশিরভাগ ফ্যাশন হাউস।বৈশাখে ছোটদের জন্যও নতুন পোশাক এনেছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস। গরমের কথা বিবেচনা করে ছোটদের পোশাকের কাপড় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সুতি, ভিসকস, লিনন। ছোটদের টিশার্টের নকশায় বিভিন্ন প্রিন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। পাঞ্জাবি, টপ, ফতুয়ায় চিরায়ত গ্রামের বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়া নকশায় এমব্রয়ডারি, লেইস, ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্টের কাজ করা হয়েছে। আর থাকছে অ্যাপলিক ও সুতার কাজ ফতুয়া,  শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে স্প্রে,  টাইডাইয়ের কাজ করা হয়েছে। যেহেতু এখন গরম, তাই ছোটদের পোশাক যেন আরামদায়ক সেদিকটি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

বৈশাখী উৎসবে ছেলেদের পোশাক বাছাইয়ে মূলত প্রাধান্য পায় পাঞ্জাবী। আর সে পাঞ্জাবীতে আধিক্য থাকে লাল-সাদার। সাদা পাঞ্জাবীতে লাল এমব্রয়ডারি, কারচুপি অথবা হালকা সেলাই থাকতে পারে। পাঞ্জাবীর গলায় আর হাতেই সাধারণত কাজ থাকে। এছাড়াও পাঞ্জাবীতে ব্লক-বাটিকের কাজও দেখতে পাওয়া যায়।তবে এখন ফ্যাশনে এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। লাল-সাদার জায়গায় ভিন্নতা খুঁজে নিয়েছে অন্য রঙও। বেগুনি, সবুজ, কমলা, নীল এই রঙগুলোও ইদানীংকালে ফ্যাশনে নজর কাড়ছে। তবে সব রঙ ছাপিয়ে সাদার কদর বরাবরই প্রাধান্য পায়।পাঞ্জাবীর সাথে ছেলেদের অনেকেই জিন্স পরতে পছন্দ করেন। তবে অনেকে চুড়িদার পায়জামাও রাখেন পছন্দের তালিকায়। পাঞ্জাবীর সাথে কোটিও কিন্তু মানিয়ে যাবে বেশ। পাঞ্জাবীর সাথে মিলিয়ে কোটি পাওয়া যাচ্ছে এখন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলোতে। যদি পাঞ্জাবী না পরতে চান তাহলে ফ্যাশনে ভিন্নতা আনতে পরতে পারেন উজ্জ্বল রঙের কুর্তিও।পাঞ্জাবী-কুর্তি ছাড়াও শার্টের প্রাধান্যও দেখা যায় আজকাল। হালকা রঙে ডিজাইন করা শার্টগুলো ছেলেরা পছন্দ করে সাধারণত আরামের জন্যই। এছাড়াও টি-শার্ট তো থাকছেই। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো ইতোমধ্যেই ছেলেদের বৈশাখী পোশাক বাজারে নিয়ে এসেছে।যেহেতু পহেলা বৈশাখ মানেই উৎসবের সাথে কাটানো একটি পুরো দিন সেদিন সাথে থাকে প্রিয় মানুষটি। চাইলে তার সাথে মিলিয়েও পোশাক পরতে পারেন। একই ডিজাইনের, একই রঙের পোশাক সবার মাঝে আপনাকে একটু আলাদাভাবে চেনাবে তা কিন্তু বলাই যায়।পোশাকের সাথে মিলিয়ে জুতা বাছাই করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু সারাদিন গরম থাকার সম্ভাবনা তাই পা যেন ঘেমে না যায় বাছাই করতে হবে তেমন জুতাই। এ সময় স্লিপার পরাটাই বেশি উপযুক্ত। তাহলে পা ঘেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। আর যেহেতু সারাদিন হাঁটাহাঁটির মাঝেই থাকা হয় কাজেই স্লিপারগুলোই বেশি আরামদায়ক হবে।

মডেল মাহমুদ রিফাত বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য খুবই স্পেশাল। আমি এটা উপভোগ করি। মডেল মাহমুদ রিফাত মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে একজন নবীন হিসেবে সেরা মডেলদের একজন। তিনি একজন শান্ত মডেল হিসাবে কাজ করছেন৷ তিনি ফ্যাশন মডেল হিসাবে ফটোশুটের মাধ্যমে মডেলিং শুরু করেন তবে তিনি মিস্টার অ্যান্ড মিস ফটোজেনিক ২০২২ থেকে দ্বিতীয় রানার-আপ হিসাবে পেশাদারভাবে মডেলিং শুরু করেন৷ ইতিমধ্যে তিনি অনেক ভাল কাজ করেছেন এবং ভারতীয় ডিজাইনারের কাজের সাথে তার চুক্তি রয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে আমি মডেলিং পছন্দ করি এবং আমি আমার সংস্কৃতির জন্য কাজ করতে চাই, আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই এবং একজন শিল্পী হিসাবে তিনি মনে করেন যে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম স্পষ্টতই প্রতিটি শিল্পীর স্বপ্ন, তাই তিনি বাংলাদেশের মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে আগ্রহী ।

রিফাত বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সাংস্কৃতিক উৎসব, এবং আমি এটা পছন্দ করি, তাই ছোটবেলা থেকেই আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছি,  পহেলা বৈশাখের জন্য আমরা রঙিন হাতের কারুকাজ করা পোশাক পছন্দ করি। পহেলা বৈশাখের জন্য আমি পাঞ্জাবি এবং অনেক রঙিন পোশাক পছন্দ করি। পহেলা বৈশাখের জন্য কিছু ফটোশুট করেছি এবার। এখন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের জন্যও আমার কিছু পরিকল্পনা আছে, শীঘ্রই আমি কিছু ফটোশুটের জন্য ভারতে যাব। সবাইকে বলতে চাই  শৃঙ্খলা বজায় রেখে আপনার পহেলা বৈশাখ সবাই উপভোগ করুন। সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা এবং আমার ভালোবাসা । আগাম শুভ পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo