• লাইফস্টাইল

আসল ঢাকাই জামদানি চিনবেন কী করে?

  • লাইফস্টাইল
  • ২৯ অক্টোবর, ২০১৯ ১৫:৪১:০০

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ জামদানি শাড়ি অনেকেই পছন্দ করেন। দেশের ঐতিহ্যের সাথে মিশে থাকা এই শাড়িতে নিজেকে সাজান অনেকেই। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, যে শাড়িটি পরছি তা আসল ঢাকাই নাকি ইন্ডিয়ান জামদানি। কারণ, জামদানি কিনতে গেলে বেশিরভাগ বিক্রেতাই ইন্ডিয়ান জামদানিকে দেশি ঢাকাই জামদানি বলে চালিয়ে দেন। সেটা জেনে হোক, না জেনেই হোক। আজকে আমি লিখছি আমি কীভাবে দুটি শাড়ির পার্থক্য করি, সে ব্যাপারে- ১. ইন্ডিয়ান জামদানি মেশিন মেইড অর্থাৎ মেশিনে বোনা, আর আসল জামদানি হ্যান্ড মেইড বা হাতে বোনা। মেশিন মেইড একটা শাড়ির বুনন আগাগোড়া একই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আসল ঢাকাই জামদানি তৈরি হয় হাতে। এর প্রতিটি সুতা একটা একটা করে বোনা হয় দুইজন ব্যাক্তির মাধ্যমে। তাই প্রতিটি শাড়ির তানা-বাইন সব আলাদা। ২. ইন্ডিয়ান জামদানির সুতা হয় হাফসিল্ক, আরও স্পেসিফিকলি বললে নায়লন এর সুতা। যেটার তানা এবং বাইন একই সুতায় তৈরি। তানা থেকে যদি একটা সুতা নিয়ে পোড়ানো হয় সেটা গুটি বেঁধে যাবে। অন্যদিকে আসল ঢাকাই জামদানি তৈরি হয় সুতি, হাফসিল্ক ও রেশম সুতায়। একই ডিজাইন ও রঙে এমন তিন কোয়ালিটির শাড়ি হতে পারে। কিন্তু তানার সুতা পোড়ালে গুটি বাঁধবে না। ছাই হয়ে যাবে। ৩. ইন্ডিয়ান জামদানির কালারগুলো খুব চকচকা হয়। একুরেট কালার পাওয়া যায় বলে কাস্টমাররা ওই শাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হয় বেশি। কিন্তু চকচক করলেই তো আর সোনা হয় না! দেশি জামদানির কালারগুলো চোখে আরাম লাগে। উজ্জ্বল কালারগুলোতেও একটা নরম আভিজাত্য আছে। ৪. ইন্ডিয়ান জামদানির পাড় একবার পরলেই বটে যায়। পেছনের দিকে উঁচু হয়ে জেগে থাকে, যা আসল ঢাকাই জামদানিতে হয় না। ৩. ইন্ডিয়ান জামদানি গায়ে কাটা বাদে, ফুলে ফুলে থাকে, মানে আনকম্ফোর্টেবল কিন্তু ঢাকাই জামদানি কটন বেজ/রেশম এর হয় বলে অনেক আরামদায়ক হয়। ৪. ইন্ডিয়ান জামদানি মেশিন মেইড বলে ২ থেকে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে একটা শাড়ি তৈরি হয়ে যায়, যেখানে আসল ঢাকাই জামদানি তৈরি করতে একজন তাঁতী কারিগর ও তার সাগরেদের কমপক্ষে ৭ দিন থেকে ৬ মাস /১ বছরের বেশি সময় লাগে। এটি ডিপেন্ড করে সুতা, কাজের ধরণ ও কারিগরের দক্ষতার ওপর। ৫. ইন্ডিয়ান জামদানিতে কাজ বেশি কিন্তু প্রাইস কম হয়। যেহেতু মেশিন মেইড তাই টাইম কম, পরিশ্রম কম, খরচ কম, তাই দামও কম। ২ ঘণ্টায় তৈরি একটা পুরো শাড়িতে কাজ করা ইন্ডিয়ান জামদানির দাম ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা হয়। যেখানে এই কাজের ঢাকাই জামদানি বুনতেেএক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। দামও ১২ থেকে ১৫ হাজার বা তার বেশি হয়। ৬. ইন্ডিয়ান জামদানিতে পুরো শাড়িতে একই কাজ হয়ে থাকে ম্যাক্সিমাম। যেটার দাম ৩ হাজার সেটাতে যেমন কাজ, যেটার ৪ হাজার টাকা ওটাতেও সমপরিমাণ কাজ। আসলে যার কাছে যেমন রাখতে পারে। অন্যদিকে ৪ হাজার টাকার একটা আসল ঢাকাই জামদানি শাড়িতে বডিতে ভারি কাজ থাকলেও কুচিতে অথবা ঘুরির পাশে হালকা কাজ থাকে। ৭. সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আঁচল। আমরা যারা জামদানি কিনে অভ্যস্ত না কিংবা কম জানি তাদের জন্য জামদানি চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আঁচল দেখা। এখনকার ম্যাক্সিমাম ইন্ডিয়ান জামদানি শাড়িগুলোতে আঁচল একই ধাচের। লম্বা লম্বা ডাল ফুলওয়ালা। কারণ একটা মেশিনের ডিজাইনের ধরণ একই রকম। তাই শাড়িগুলোর আঁচলও একই রকম থাকে। আসল জামদানির আঁচলে ভিন্নতা আছে। কিন্তু মেশিনের ডাইচ চেঞ্জ করে আঁচলে নতুন ডিজাইনও আসছে কিছু কিছু তবে তা সংখ্যায় কম। বৈচিত্র নেই বললেই চলে। কারণ এগুলো তে কস্টিং বেশি পরবে বলে একটা ফ্যাক্টিরিতে ২-৩টার বেশি ক্যাটাগরি থাকে না।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo