• লাইফস্টাইল

সন্তান আপনার কথা শোনে না?

  • লাইফস্টাইল
  • ০৭ অক্টোবর, ২০১৯ ১৩:৪১:৩৪

সিএনআই  ডেস্কঃ সন্তানকে শুধু ভালো বিদ্যালয় বা আপনার শেখানো শিক্ষাগুলোই ভালো মানুষ করে গড়ে তোলে না। এক্ষেত্রে অবদান রাখে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আপনার ছোট ছোট কিছু দিক প্রতিদিন আপনাকে একজন মানুষ হিসেবে, একজন শিক্ষক হিসেবে সন্তানের সামনে তুলে ধরে। এমনই একটি দিক হলো আপনার কণ্ঠস্বর। হয়তো আপনার কাছে আপনি কোন স্বরে সন্তানের সাথে কথা বলছেন সেটা খুব একটা গুরুত্ব রাখে না। তবে এই যে আপনার সন্তান আপনি যেমনটা চাচ্ছেন সেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে না বা রেগে যাচ্ছে, সেটার পেছনে কিছু আপনার কণ্ঠস্বর বড় ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে, কিশোর বয়সীদের জন্য এটি সবচাইতে বেশি দেখা যায়। চলুন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক! সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় যে, কিশোরীরা মায়েদের গলায় নিয়ন্ত্রণ করার ধরন পছন্দ করে না। কারডিফ ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এই গবেষণায় অংশ নেন ১৪-১৫ বছর বয়সী ১,০০০ জন মানুষ। এদের মধ্যে ছিলেন ৪৮৬ জন পুরুষ এবং ৫১৪ জন নারী। এই গবেষণায় প্রথমেই তারা তাদের মায়ের নিয়ন্ত্রণসুলভ কণ্ঠস্বরে কেমন প্রতিক্রিয়া জানান সেটা দেখা হয়। এরপর তাদেরকে তিনটি দলে ভাগ করে দেওয়া হয়। এই প্রত্যেকটি ভাগেই মায়েদের কণ্ঠস্বর শোনানো হয়। এক্ষেত্রে, তাদের কথা বলার বিষয়টি ছিল এক। তবে বলার ধরনটা ছিল আলাদা। প্রথম দলে মায়েদের কণ্ঠস্বর ছিল নিয়ন্ত্রণসুলভ। দ্বিতীয় দলে ছিল সমর্থনসুলভ এবং তৃতীয় ধাপে ছিল নিরপেক্ষ। প্রত্যেকেই অংশগ্রহণকারীদের ‘স্কুলে যাওয়ার জন্য’ বা ‘বই পড়ার জন্য’ তাগিদ দেন। প্রথম দলের মায়েরা এক্ষেত্রে খানিকটা রেগে এবং জোর করে কাজগুলো করতে বললেও, পরবর্তী দুই দলের মায়েদের কণ্ঠস্বর ছিল সাহায্যকারী এবং সমর্থন দেওয়া মতো। কিশোর-কিশোরীরা এই পরীক্ষার পর একটি জরিপে অংশ নেন, যেখানে তাদেরকে তাদের মায়ের এই কথাগুলোর ফলে নিজেদের কী মনে হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। জরিপে দেখা যায় যে, মায়েদের এই কণ্ঠস্বরের উপরে ভিত্তি করে সন্তানের মানসিক অবস্থা এবং ব্যবহার করার পদ্ধতি পরিবর্তিত হচ্ছে। একজন কিশোর বা কিশোরীর সাথে কথা বলা বা তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা বাবা-মায়ের জন্য অত্যন্ত কঠিন একটি ব্যাপার। বিশেষ করে, দৈনন্দিন জীবনে নানা কারণেই মানসিক নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন বাবা-মা। সেক্ষেত্রে, সন্তানের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে খুব বেশি ধৈর্য্য রাখাটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকেই আবার ভাবেন যে, শিশুদের সাথে সবসময় কোমল স্বরে কথা বলা উচিত। কিশোরদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝতে পারেন না তারা। এ দিকে এই বয়সে একজন মানুষ বাবা-মায়ের কাছ থেকে ইতিবাচক মনোভাব দেখতে এবং তার কথা বাবা-মা ভাবছেন বা শুনছেন সেটা অনুভব করতে ভালোবাসে। তাই বাবা-মা ঠিক যেমনটা চান তেমন ফলাফল তারা সন্তানের সাথে কথা বলে পান না। এতে করে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ভুল বোঝার সম্ভাবনা বাড়ে। সন্তান যেমন নিজের চাওয়ার জিনিসটি পায় না, তেমনি পায় না বাবা-মাও। এই পুরো পদ্ধতিটি, সন্তানের সাথে সহযোগিতা ও ভালোবাসাপূর্ণ কথা বলার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন না বা খুব একটা ভাবতে চান না। কিছুটা কষ্ট হলেও এটি বাবা-মায়ের করা উচিৎ বলে মনে করেন গবেষকরা। তবে, এখনো পর্যন্ত এই গবেষণাটি পুরোটা সম্পূর্ণ করতে পারেননি গবেষকরা। তাদের মতে, গবেষণার শুধু অর্ধেকটা সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত শুধু মায়েদের কণ্ঠস্বরের প্রভাবই দেখেছেন তারা। পরবর্তীকালে বাবাদের কোন কণ্ঠস্বর বাচ্চাদের উপরে কেমন প্রভাব ফেলে সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে গবেষণার জন্য অপেক্ষা না করে আপনার শিশুর সাথে ভালোবাসার সুরে কথা বলুন, তাকে বোঝান যে আপনি তার সাথে আছেন। এক্ষেত্রে, আপনি ভালো থাকবেন, ভালো থাকবে আপনার সন্তানও! সূত্র- মেডিকেল নিউজ টুডে

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo