ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদরে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত। উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে যখন তখন পথচারীদের উপর চড়াও হচ্ছে কুকুর। সুযোগ বুঝে দিচ্ছে কামড়। কুকুরের ভয়ে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে এলাকায়।
ইদানিং দলবদ্ধভাবে বেওয়ারিশ কুকুরগুলো বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করে গরু,ছাগল, হাঁস,মুরগীগুলোকেও আক্রমন করছে। রবিবার (০৭ অক্টোবর) সকালে সদর মুন্সিপাড়া সহ কয়েকটি পাড়ায় প্রায় ১০ জন বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমনের শিকার হয়। কুকুরের আক্রমনে আহতরা হলো, সরকার পাড়া মকবুল হোসেনের শিশু কন্যা মনি আক্তার(৫), মৃত সূর্য্য মোহনের পুত্র কুলিন চন্দ্র(৫০), মৃত ক্ষির মোহনের পুত্র লঙ্কেশ্বর(৬০), মহিম উদ্দীনের স্ত্রী মসলিমা বেগম(৬৫), মৃত ইসমাইল হোসেনের পুত্র রুহুল আমিন(৫৮), হাফিজ উদ্দীনের পুত্র সহিদুল ইসলাম(৩২), মালিগাঁও গ্রামের মৃত কলিম উদ্দীনের স্ত্রী জাহানারা ( ৬০), সহিম উদ্দীনের স্ত্রী সালেহা বেগম (৬০) ,স্কুল ছাত্রী ২জন। জনৈক জন প্রতিনিধি বলেন,
বেওয়ারিশ কুকুরগুলো উপজেলার মুন্সি পাড়া, গোয়াল পাড়া,হাসপাতাল চত্বর, উপজেলা পরিষদ চত্বর সহ বিভিন্ন এলাকায় দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুযোগ পেলে ছাগল, হাঁস-মুরগী ধরে ধরে খেয়ে ফেলছে বা মেরে ফেলছে। ঠাকুরগাঁও বিভিন্ন এলাকায় শত শত হাঁস মুরগী কুকুরে খেয়েছে, প্রতিনিয়ত গরু-ছাগলগুলোকে আক্রমন করছে। ঠাকুরগাঁও সদরে এমন কোন পাড়া-মহল্লা নেই- যেখানে কুকুরের উৎপাত নেই। জনৈক শিক্ষক জানান, কুকুরের উৎপাতের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষাথীর সংখ্যা কমে গেছে। জনৈক শিক্ষাথীর অভিভাবক বলেন, কুকুরের আক্রমনের ভয়ে আপাদত সন্তানকে স্কুলে পাঠাচ্ছিনা। কুকুরের কারণে রাস্তাঘাটে চলাচল নিরাপদ নয়। মুন্সি পাড়া কাদেরুল বলেন আমার ভাতিজা বুল বুল স্কুলে পরে কিন্তু শিশু পার্কের সামনে ৮/৯ টা কুকুর বসে থাকে মোটরসাইকেল গেলেই কামরে ধরে তাই ভাতিজাকে স্কুলে কম যেতেদি।
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের নাম প্রকাশের অন ইচ্ছুক এক ডাঃ বলেন কয়েকজন কুকুর কামড়ানো রোগী হাসপাতালে এসেছিল। ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে জলাতঙ্ক রোগ ছড়াতে পারে। এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে সময়মত সঠিক ব্যবস্থা বা টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। তিনি আরো বলেন,কুকুর কামড় বা আঁচড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষারযুক্ত সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধৌত করতে হবে।
এরপর যথাসময়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন/টিকা নিতে হবে।ভ্যাক্সিন থাকলে কুকুর কামড়ানো রোগীরা হয়রানীর শিকার হতো না। নাম প্রকাশের অন ইচ্ছুক আরেক ডাঃ জানান, কুকুর নিধনে সরকারের আইন আর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ২০১২ সাল থেকেই। পরিবর্তে বিচ্ছিন্ন ও অনিয়মিতভাবে চালু হয়েছে কুকুরের বন্ধা ও জলাতঙ্ক রোগের টিকা দেয়া কর্মসুচি। তিনি বলেন, একটি মাদি কুকুর বছরে আটটি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে। কুকুর মারা বন্ধ, আবার বন্ধ্যাকরণও অনিয়মিত, তাই কুকুরের সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়েছে।।
মন্তব্য ( ০)