রংপুর ব্যুরো: রংপুরের পীরগঞ্জে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সৈনিকরা বর্তমান প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন।তিনি বলেন,খুব বড় গলায় বলতেন আমি পালাবো না,আমি শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে’।কিš‘ আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। বুধবার (১৪আগস্ট)দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া কামিল মাদরাসা মাঠে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন,হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।তারা পালিয়ে গেলেও তাদের লোক এখনো রয়েছে।আমরা পরিষ্কারভাবে দাবি জানিয়েছি, যেসব পুলিশ এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করতে হবে।হাসিনার বিচার করা ও হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্যদের লুটপাট ও খুনের বিচার করতে হবে। বিচার শুরু হয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন।আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর।ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। তারা আজ নিজেরাই পালিয়েছে। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
কোটা আন্দোলনে রংপুরে গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে জাফরপাড়া কামিল মাদ্রসা মাঠে রংপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত সম্প্রতি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।
এলাকাবাসীর দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি পীরগঞ্জে একটি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ঘোষনা দেন। সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি আরও বলেন, এই বাংলাদেশ আমাদের সকলের।সকলে সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানান।
দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘যে ইতিহাস হচ্ছে,তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। সরকারের পতনের দাবিতে শত শত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেএভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন।’ তিনি বলেন, ‘হাসিনার বিচার দাবিতে সব রাজনৈতিক দল আজ সমাবেশ করছে। হাসিনা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে হাসিনা একটা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন।’ আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে ইতিহাস হচ্ছে, তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস।ফ্যাসিবাদী, খুনি সরকারের পতনের দাবিতে শত শত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল, তখন হাসিনা ভয়ে পালিয়ে গেলেন। পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন।’
তিনি বলেন, ‘হাসিনার বিচার দাবিতে সব রাজনৈতিক দল আজ সমাবেশ করছে। হাসিনা শত শত মানুষকে হত্যা করেছেন, গুম করেছেন। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে হাসিনা একটা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন,‘আবু সাঈদ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন।তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেছি। আজ তারা বাকরুদ্ধ।কথা বলতে পারছেন না। অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে। আবু সাঈদের মতো যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ সফল করতে আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এর আগে নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী হাসিনা ও সাবেক স্বাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল,কাদেরসহ জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার প্র¯তি গ্রহন করছেন পরিবারের।হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারে দাবি করেন নিহতের স্বজনরা। এরআগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে গাড়িবহরে করে পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। পরে নিহতের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং সমবেদনা জানান। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ,রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু,রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম,মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
মন্তব্য ( ০)