রংপুর ব্যুরোঃ দেশের দ্বিতীয় বৃহতত্তম সিটি করপোরেশন রংপুর। এ সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলররা আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় নিরাপত্তার অভাবে আত্মগোপন করায় নগরবাসির লাখ লাখ মানুষ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন কার্যালয় ও বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে জানা গেছে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তোপে শেখ হাসিনা প্রধান মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেবার পর সারা দেশের মতো রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ জন কাউন্সিলর এবং ৬ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং বিভিন্ন পদে থাকার কারনে জনরোষের আশংকায় আত্মগোপন করেছেন।ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জরুরী প্রয়োজনে তাদের কার্যালয়ে ও সিটি করপোরেশনে গিয়েও তাদের দেখা পাচ্ছেন না বলে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবার অভিযোগ করেছেন তারা।
রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে,৩৩টি ওয়ার্ডে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেট্রোপলিটান পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি হারাধন রায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন। এর পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা লাশ সড়কে পড়ে থাকার পর সিটি মেয়র এসে লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
এ ছাড়াও রংপুর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র ও রংপুর মেট্রোপলিটান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম,২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শাহাজাদা আরমান আত্মগোপন করে আছেন।একই ভাবে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কউিন্সিলর গোলাম সরোয়ার মির্জ্া, ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশেক আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু হোসেন চঞ্চল, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুর রহমান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল গাফ্ফার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম, ২৮ নম্বর ওয়াডের ইজ্ঞিনিয়ার শাহাদত হোসেন, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হারুনর রশীদ, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলম তোতা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাদত হোসেন সহ আরও কয়েকজন কাউন্সিলর। এ ছাড়াও ৬ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন জানান আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থক কাউন্সিলররা অফিসেও আসেননা।সিটি করপোরেশন অফিসে আসেননা।তারা ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর থেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন।তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মজ্ঞু বলেন প্রায় ২০ জনের মতো কাউন্সিলরকে আমরা দেখতে পাচ্ছিনা।কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতির কারনে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসি। তার পরেও প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে তার কাছে আসলে চেষ্টা করছেন সেবা দিতে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার জানান,প্রায় ২০ জনের মতো কাউন্সিলর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে আসছেননা। নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু আইন অনুযায়ী কিছুই করতে পারছিনা।পরপর তিনটা সভায় অনুপস্থিত থাকলে সাসপেন্ড হয়ে যায়। অন্যদের দায়িত্ব দেয়া যায়।তা ছাড়া প্রতিটা ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের আলাদা অফিস করে দেয়া হয়েছিলো সব সেটআপ ছিলো। এখন দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আমরা করছি বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য ( ০)