গোপালপুর প্রতিনিধিঃ পবিত্র রমজানে শুরু হওয়ার পর থেকেই টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন আনাচে কানাছে বাজার গুলো নিত্যপণ্যের দাম অস্থির হয়ে উঠেছে। এতে বিপাকে পড়েছে ক্রেতারা। গোপালপুর বিভিন্ন হাট ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের হঠাৎ করে অলৌকিক শক্তিতে চড়া দামে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন। যেন রমজান মাস শুরু হলো না জানি সোনার ডিম পাড়ার হাস তাদের হাতে এসে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো নজরদারি নেই বলে ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষজন জানিয়েছেন।
রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই সবজির বাজার চড়া। রাতারাতি দাম চড়া হয়ে গলায় কাটা বিঁধে ছটপট করছে ক্রেতারা। একদিনের ব্যবধানে দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে চিকন বেগুন ৬০ টাকা, মাঝারি ও গোল বেগুন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টমেটো ৩০-৪০, গাজর ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, করলা ৯০-১১০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ৪০-৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪৮০-৫০০ টাকা, প্রতি পিস লাউ (আকারভেদে) ৫০-৬০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, তরমুজ ৬০-৯০ টাকা, বেল আকার অনুপাতে ৬০-২৫০ টাকা পর্যন্ত, দেশি রসুন ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০-৯০ টাকা। এছাড়া পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এখানে প্রতিটি পণ্যের দাম ১০-২০টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়াও বাজারে কার্ডিনাল আলু ৩০ টাকা, শিল আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার সাদা পাকরি আলু ৪০ টাকা ও গ্রানুলা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ৬০ থেকে এক লাফে ৯০ টাকা ও দেশি আদার কেজি ২২০-২৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে বিক্রেতারা বলেন, রমজান মাসে বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়, কিন্তু আমদানি কম থাকায় দাম বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা চিনি ১৫০-১৬০ টাকা, প্যাকেট আটা আগের মতোই ৬০-৬৫ টাকা, খোলা আটা ৪৮-৫০ টাকা, ছোলাবুট ১০০-১২০ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকা, মসুর ডাল (মাঝারি) ১২০ টাকা, চিকন ১৩৫-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও বুটডাল ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খেজুর প্রতি কেজি ১৯০-৩০০ টাকা। একটু ভালো খেজুর ৩০০-৮৫০ টাকা পর্যন্ত। বেশন প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা। ইশুবগুল ভুসি রাতারাতি এখন বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-৩৫০০ টাকা। খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৩০-২৫০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির দাম বেড়ে ৩২০-৩৫০ টাকা।
বাজারে গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ৯০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন আগের মতোই ১৭৩ টাকা ও দুই লিটার ৩৪৬ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কার্প ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৯০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৪০০-৭০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৮০-২৫০ টাকা এবং ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বাজার করতে আসা সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আর পারছিনা, মনে চায় গলায় রশি লাগি মরে যাই! বাজারে আসলে মাথা ঠিক রাখতে পারিনা। আবার ব্যবসায়ীরা একটু দাম জিজ্ঞাসা করলেই যে আচরণ করে তা আর বলার ভাষা রাখেনা। অটোরিকশা ও অটোগাড়ির ড্রাইভার, শ্রমিক ও দিনমজুর সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বলেন, প্রতিটা নিত্য পন্যের দাম বেড়েই চলেছে।
শুধু শুনি সিন্ডিকেট হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের তদারকি সহ এর প্রতিকার চাই। গোপালপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল হাসান জানান আমাদের বাজারে প্রতিনিয়ত তদারকি করে থাকি, এবং নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করি।
মন্তব্য ( ০)