• বিশেষ প্রতিবেদন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের আমের সন্ধান

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৩ আগস্ট, ২০২২ ১৮:৫৪:১৯

ছবিঃ সিএনআই

মো. ফারুক হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের একটি আমের সন্ধান পেয়েছে উদ্যানতত্ত্ববিদরা। বরেন্দ্র অঞ্চলের জৈটাবটতলা এলাকার দিঘা গ্রামে হাসমত আলীর বাগানে আমটির খোঁজ পাওয়া গেছে। আমটিকে গত ৪ বছর ধরে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদরা। 

নাবি জাতের এ আমটি পর্যবেক্ষণ করছেন হার্টিকালচার সেন্টারের সহকারী উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহিন সালেহউদ্দিন। তার কথামতে - ‘গাছটি প্রায়ই ক্ষিরশাপাত আম গাছের মতো দেখতে। মাঘ-ফাল্গুন মাসের মধ্যে মুকুল আসে।  

সাধারণত এ আম ৫-৬ মাস পর পাকে। আমের খোসা মাঝারী মসৃণ। আমটি পাকলে বোটার দিকে লালচে বর্ণের হয়। আঁটি পাতলা আর আমে কোন আঁশ নেই।’

সালেহউদ্দিন  জানান; 'আমটি সর্বোচ্চ ওজন এক কেজিরও বেশি হয় আর সর্বনিম্ন প্রায় ৪০০ গ্রাম। এ আমের মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় ২৪ শতাংশ। ৩-৪ বছর পর গাছে ফলন হবে। ছোটগাছে প্রায় ২০ কেজি আম উৎপাদন হয়। গাছের বয়সের সাথে আমের ফলনও বাড়ব'

শাহিন আলী এ বাগানের মালি। তিনি বছর তিনেক ধরে এ বাগান দেখভালের কাজ করেন। তিনি  বলেন; ‘সাধারনত অনান্য আমের মুকলের সময় এ গাছেরও মুকুল দেখা দেয়। মুকুল আশার ৫ থেকে ৬ মাস পর আম পাকতে দেখা যায়।’

তিনি আরও বলেন; ‘এ নতুন জাতের আমের গাছটি ভারত থেকে আনা হয়েছে। ক্ষিরশাপাত আম গাছের সাথে এ গাছটির প্রায় মিল আছে। আমের ফলন ভালো, খেতে খুব মিষ্টি। নতুন জাতের আমটি যারা চাষাবাদ করবে তারা সফল হবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগান চাষি মেহেদী হাসান  বলেন; ‘আমটি নতুন জাতের, স্বাদও ক্ষিরশাপাতের মতো। এ আম যেহেতু দেরিতে (বিলম্ব) পাকে তাই লেট ক্ষিরশাপাত নামে আঞ্চলিক ভাবে ডাকা হয়। আমটির আকার আকৃতি অনান্য আমের চেয়ে বড়, গোলাকার। এ আমে রোগ বালাই খুব কম।’

৭ বিঘা জমি লিজ আমের বাগান গড়েছেন হাসমত আলী (বাবু)। বাবু বলেন; ‘পাঁচ বছর পূর্বে আমার ভাই মাইনুল ইসলামের এক বন্ধু ভারতে এ আম খেয়ে ‍মুগ্ধ হয়। ওই গাছের সায়ন (চারা তৈরীর উপযোগী ডগা) সংগ্রহ করে দেশে আনেন। ওই সায়ন দিয়ে একটি কলম বাঁধি। এ আমের চাষাবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছি। বাগানে এখন প্রায় ৩০ টি গাছ আছে।’

তিনি আরও বলেন; ‘নতুন জাতের আমটি এখনও বাজারে ‍গিয়ে বিক্রি করতে হয়নি। বাগানের আম বাগানে বেঁচে শেষ হয়ে যায়। এ বছরে প্রায় পাঁচশ টাকা কেজি করে প্রায় ১০ হাজার টাকার এ আম বিক্রি করেছি। এ নতুন জাতের আম গাছের চারা নেওয়ার জন্য অর্ডার দিলে, চারা বিক্রি করা হয়। প্রতিটি চারার মূল্য ১ হাজার টাকা।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচারের উপপরিচালক  কুমার প্রামাণিক  বলেন; ‘আমটির স্বাদগুণ ক্ষিরশাপাত আমের সাথে তুলনা করা যায়।বলা চলে অসময়ের ক্ষিরশাপাত আম। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আমটির 'কল্যাণ ভোগ' নাম রাখার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo