• বিশেষ প্রতিবেদন

আরিচার পশুর হাট বন্ধ বিপাকে ক্রেতা-বিক্রেতারা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১০ জুলাই, ২০২১ ১১:৪৪:৪৩

ছবিঃ সিএনআই

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঐতিহ্যবাহী আরিচা ঘাটের সাপ্তাহিক পশুর হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ী এবং খামারীরা।করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বৃদ্ধির কারণে আরিচা ঘাটের সাপ্তাহিক পশুর হাট বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন। জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার আরিচা ঘাটে এ পশুর হাট বসে।এ হাটে মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এবং আশপাশের রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এ হাটে
গবাদি পশু উঠে।এ হাটকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন লোকের কর্মসংস্থান। 

যেমন ভাতের হোটেল, পশুর খাবারসহ নানাবিধ কর্ম করে লোকজন জীবিকা নির্বাহ করছে।হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব লোকজন কর্মহীন হয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে।আর কিছু দিন পরেই শুরু হবে কোরবানির পশুর হাটে।যমুনা নদীর পাড়ে অবস্থিত এ হাটের সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা আসতেন। সাপ্তাহিক এ হাটে অসংখ্য গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।

শুক্রবার সকালে সরজমিনে আরিচা পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এ পশুর হাটটির বেশীর ভাগ অংশ ফাঁকা রয়েছে।হাটের উত্তর-পশ্চিম অংশে স্বল্প সংখ্যক কিছু পশু দেখা যায়।হাট কর্তৃপক্ষ বন্ধ ঘোষণা করলেও অনেক পশু ব্যবসায়ীরা তা জানতেন না বলে অন্যান্য দিনের মতো ব্যবসায়ীরা পশু নিয়ে হাটে আসেন।খবর পেয়ে শিবালয় উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভুমি)এস,এম আবু দারদা হাটে আসলে উপস্থিত গরু ব্যবসায়ীরা এদিকে-ওদিক ছুটা-ছুটি করে হাট ত্যাগ করেন।মহুর্তের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যায় আরিচার পশুর হাট। আলোক দিয়া চরের গরু ব্যবসায়ী আক্কাস আলী বলেন, আমি জানতাম না হাট বন্ধ করে দিয়েছে, জানলে হাটে আসতাম না।এভাবে হাট বন্ধ থাকলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।

সিঙ্গাইরের গরু ব্যবসায়ী রমেজ মিয়া বলেন, আরিচায় হাট বসার পর থেকেই তিনি এ হাটে আসেন এবং এখান থেকে পশু ক্রয় করে জেলার অন্যান্য হাটে নিয়ে বিক্রি করেন।নিজস্ব কোন পুঁজি নেই।মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা ও সুদি করে টাকা নিয়ে গরুর ব্যবসা করছেন। তিনি প্রায় ১৩/১৪ বছর ধরে গরুর ব্যবসা করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রমকম সংসার পরিচালনা করছেন।তিনি জানতেন না করোনার কারণে আরিচার পশুর হাট বন্ধ করে দিয়েছে।তাই আজকে (শুক্রবার) তিনি গরু ক্রয়ের জন্য হাটে আসেন।এভাবে যদি হাট বন্ধ থাকে তাহলে এবার কোরবানির ঈদ করা হবে না বলে তিনি জানান। 

মধ্যনগর চরের কৃষক সন্তোষ, আমির চান বলেন, আমরা কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ৩/৪টি করে ষাড় গরু লালন-পালন করি।আরিচার পশুর হাট বাড়ির কাছে হওয়ায় এখানেই তা বিক্রি করে থাকেন।কিন্তু এবার যদি আরিচার পশুর হাট বন্ধ থাকে তাহলে কোথায় নিয়ে বিক্রি করবেন এ নিয়ে মহা চিন্তিত রয়েছেন তারা। 

আরিচা পশু হাটের ইজাদার কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান খান হিরু মিয়া বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক গত মঙ্গলবার থেকে আরিচা বন্ধ রেখেছে।আজকে (শুক্রবার)যে সব ব্যাপারী এসেছে ওদের অনেকে হাট বন্ধের বিষয়টি জানতেন না তাই এসেছে।এরপরও আমরা হাট লাগতে দেয়নি।মাইকিং করে ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে হাট থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং তারা চলে গেছেন। আরিচাতে প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার এ দু’দিন পশুর হাট লাগতো।হাট বন্ধ থাকায় প্রতি হাট থেকে প্রায় ৪লাখ টাকা আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর‌যন্ত আরিচার এ পশুর হাট বন্ধ থাকবে। 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo