• সমগ্র বাংলা

উত্তরাঞ্চলে তীব্র শীত-কুয়াশার থাবায় স্থবির জনজীবন

  • সমগ্র বাংলা

ছবিঃ সিএনআই

নজরুল ইসলাম রাজু, রংপুর: রংপুরসহ উত্তরের বিস্তীর্ণ জেলাজুড়ে শীতের তীব্রতা গত কয়েকদিন ধরে হু হু করে বাড়ছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে পুরো অঞ্চল।কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা রাস্তা–ঘাটে দিনের আলোও যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে যানবাহন।এতে বিঘ্ন ঘটছে সড়ক-মহাসড়কের স্বাভাবিক চলাচলে।পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, কুয়াশায় হঠাৎ সামনে কিছু দেখা না যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার(৪ডিসেম্বর)সকালে রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রী,নীলফামারীর  সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ৮ডিগ্রী,কুড়িগ্রামের রাজার হাটে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রী,দিনাজপুরে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রী,নীলফামীর ডিমলায় ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রী ,লালমনির হাট,১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রী, ও গাইবান্ধায় ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।

অন্যদিকে অতিরিক্ত ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটা ও শ্রমঘন পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। শহরের ফুটপাত, স্টেশন রোড, কাপড়পট্টি ও মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে রাতভর গরম কাপড় কেনার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ফুটপাতের দোকানিরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ করে বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।বিশেষ করে সোয়েটার, শাল, গরম টুপি, মোজা ও কম্বল বিক্রি হচ্ছে বেশি।

নগরীতে রিকশা চালক আবদুল হামিদ বলেন,ভোর বেলায় রাস্তায় নামাই যায় না। হাত-পা জমে আসে। শীত এমন যে কাজও ঠিকমতো করতে পারি না।গরম কাপড় না কিনলে চলবেই না-কিন্তু টাকারও সংকট। তাই ফুটপাত থেকে যতটা সস্তায় পাওয়া যায়, কিনে নিচ্ছি।

নগরীর ফুটপাতের দোকানি মো.রহিম উদ্দিন জানান,শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বাড়ছে।রাতভর দোকান খোলা থাকে। লোকজন বেশি আসে রাতেই, কারণ তখন ঠান্ডা সবচেয়ে বেশি টের পাওয়া যায়।”

ঘন কুয়াশার কারণে শুধু শহরের মানুষই নয়,বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরাও।ভোরের কুয়াশা না কাটায় মাঠে কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। আলুর চাষ, শাকসবজির পরিচর্যা, পেঁয়াজ–রসুনের জমি দেখাশোনা করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন কৃষিশ্রমিকেরা। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা থাকায় ফসলের ক্ষতি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে কৃষকদের মনে।

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক সংকটও ঘনীভূত হচ্ছে। হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ। রংপুর নগরীর বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন,আমাদের এলাকায় অনেক মানুষ খোলা ঘরে থাকে বা পাতলা কাপড়ে দিন কাটায়। শৈত্যপ্রবাহ নামলে তাদের অবস্থা খুব খারাপ হবে। তাই এখনই শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া খুব জরুরি।”

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের এই দাপটে বাড়ছে সর্দি–কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য মৌসুমি রোগের প্রকোপ। শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

একদিকে কুয়াশার কারনে যানবাহন চলাচল ব্যাহত, অন্যদিকে হাজারো শ্রমজীবী মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দৈনন্দিন দুর্ভোগ। শীত যত বাড়ছে, ততই ফুটপাতের বাজার জমে উঠছে, আর বাড়ছে গরম কাপড়ের দাম। তীব্র শীতের এই অবস্থার মধ্যেই রংপুরবাসী অপেক্ষা করছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র সহায়তার।

রংপুরের মানুষ বলছেন-শীতের প্রকোপ সহনশীল মাত্রার বাইরে যাচ্ছে। তাই মানবিক দুর্ভোগ কমাতে এখনই জরুরি সহায়তা পৌঁছানো প্রয়োজন।

রংপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান,রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়ছে এবং কয়েকদিন এটি অব্যাহত থাকতে পারে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে দুই থেকে তিন দফা মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচেও নামতে পারে এবং কখনও ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি পর্যন্ত নামার সম্ভাবনা রয়েছে।”

মন্তব্য (০)





image

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ১

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শমশেরনগর...

image

নওগাঁয় স্কুল মাঠ দখল করে বাণিজ্য মেলা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় স্কুল মাঠ দখল করে প্রশাসনের কোন ধরনে...

image

পাবনায় মহিলাদলের দুই নেত্রী গ্রেপ্তার

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার চাটমোহরে উপজেলা মহিলাদলের দুই নেত্রী...

image

সকালে নিখোঁজ, রাতে প্রতিবেশীর ঘরে মিলল শিশু সাবার লাশ

 ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি গ্রামে এক মর্মান্...

image

খালেদা জিয়ার মতো আদর্শবান ও ত্যাগী রাজনীতিবিদ এশিয়া মহাদে...

ফরিদপুর প্রতিনিধি : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াক...

  • company_logo