• লিড নিউজ
  • জাতীয়

ডিসি নিয়োগ ঘিরে ফের বিতর্ক

  • Lead News
  • জাতীয়

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক : জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই ২৯ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বদলি ও নতুন নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তবে এই পদায়ন ঘিরে ফের উঠেছে  নিরপেক্ষতা, দক্ষতা ও রাজনৈতিক আনুগত্যের প্রশ্ন 

অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ পদায়নই হয়েছে আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ও বিতর্কিত কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে। এতে প্রশাসনের ভেতরে ক্ষোভের পাশাপাশি নিরপেক্ষতা ও নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। মাঠ প্রশাসনে ঝুঁকি ও আস্থাহীনতার আশঙ্কাও করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নির্বাচনের আগে আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ও বিতর্কিত কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক পদে এই পদায়নকে অনেকেই দেখছেন ‘নির্বাচনী মাঠ দখলের কৌশল’ হিসেবে। আর এ কারণে জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে জনপ্রশাসনের বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না—বরং নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা, বর্তমানে অন্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, এমন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সামনে নির্বাচন, এই সময়ে মাঠ প্রশাসনের দায়িত্ব পেয়েছেন আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী অন্তত ১০ থেকে ১২ জন কর্মকর্তা।

পাশাপাশি, মাঠ প্রশাসনে অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও তিনজন ইকনোমিক ক্যাডারের কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া অভিজ্ঞতা নাই বললে চলে—এমন অযোগ্যদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ হয়েছে। এতে একদিকে যেমন নির্বাচনকালীন মাঠ প্রশাসনে বড় ঝুঁকির শঙ্কা রয়েছে, তেমনই যোগ্য ও বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বঞ্চনার ভার আরও বাড়ছে বলে মনে করেন তারা।

সামাজিক মাধ্যমে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়া ভিডিও ভাইরাল হওয়া আজাদ জাহানকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করেছে সরকার।

এর আগে তিনি ভোলার জেলা প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ এলাকায় শত একর জমিতে মৎস্য ঘের তৈরির অভিযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও তাকে নির্বাচনকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা গাজীপুরের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ায় প্রশাসনের ভেতরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

একইভাবে, সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ছবি ও বার্তা শেয়ার করা উপসচিব আফসানা বিলকিসকে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে তিনি শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, এমনকি টিউলিপ রেজওয়ানার ছবিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও এমন দলীয় সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ্যে আনায় প্রশাসনের ভেতর সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে, নড়াইলের সাবেক ডিসি শারমিন আক্তার জাহানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি করা হয়েছে। উপসচিব পদে পদোন্নতির পরই তিনি ও কিছু আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শপথ’ নেন। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের ডিসি থাকাকালীন আর্থিক অনিয়ম ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ইস্যুর অভিযোগও রয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে।

সাইফুল ইসলাম আওয়ামী শাসনামলে অর্থ বিভাগ, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, একই জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে কাজ করেছেন। আওয়ামী সুবিধাভোগী এই কর্মকর্তা ফেনীর জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেই এক আওয়ামী লীগ নেতার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হন। তার এই পদায়ন নিয়েও উঠেছে নানা বিতর্ক।

এছাড়া ইকোনমিক ক্যাডারের অন্তত তিন কর্মকর্তা—যাদের মাঠ প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা সীমিত—তাদেরও জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ময়মনসিংহের নতুন ডিসি সাইফুর রহমান ও মানিকগঞ্জের ডিসি নাজমুন আরা সুলতানা। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও তাদের পদায়ন প্রশ্ন তুলছে দক্ষ ও বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে।

একইভাবে, আওয়ামী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বাগেরহাটের সাবেক ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীর ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। তারও মাঠ প্রশাসনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই জেলার ডিসি পদে পরপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, বিতর্কিত ২০১৪ সালের নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং অফিসার (এআরও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ ও লুত্ফুন নাহারকেও যথাক্রমে বরগুনা ও মেহেরপুরের ডিসি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা ও নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমানের সময় থেকেই ডিসি নিয়োগ নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ চলে আসছে।

তখন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদে নেমেছিলেন। সেই বিতর্ক এখন নতুন আঙ্গিকে আবারও ফিরে এসেছে, বিশেষ করে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে।

সাবেক সচিব ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ আব্দুল আউয়াল মজুমদার গণমাধ্যমে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দিলে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নষ্ট হয়—এটাই সবচেয়ে বড় বিপদ। নির্বাচনকালীন সময়ে ডিসিরা মাঠ প্রশাসনের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। তাদের নিরপেক্ষ আচরণের ওপরই নির্ভর করে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও শান্তি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এখনই এ ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করা উচিত। অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার না দিলে প্রশাসনের ভেতর বিভাজন আরও গভীর হবে, যা রাষ্ট্রীয় সেবার মানকেও ক্ষুণ্ণ করবে।’

 

মন্তব্য (০)





image

‎মধুপুরের পীরের বক্তব্য অসত্য, দয়া করে সংযত হোন: ধর্ম উপদ...

নিউজ ডেস্কঃ ওমরাহর নামে ধর্ম উপদেষ্টা পালিয়ে গেছেন, মধু...

image

‎ভোলার গ্যাস দিয়েই নতুন সার কারখানা স্থাপন করা হবে: শিল্...

নিউজ ডেস্কঃ শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ভোলার বি...

image

তরুণদের আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণে সরকারের ২৮ কোটি টাকা অনুমোদন

নিউজ ডেস্ক : দেশের তরুণদের আত্মরক্ষার দক্ষতা বাড়াতে ২৭ কোটি ...

image

জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল ফ্যাক্টরির সন্ধান

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার জেনেভা ক্যাম্প থেকে ...

image

ভোলায় সার কারখানা পরিদর্শন করলেন তিন উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক : ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুত নিশ্চিত করতে নির্মাণ করা হ...

  • company_logo