রংপুর ব্যুরোঃ শিক্ষার্থীর প্রধান দায়িত্ব জ্ঞান অর্জন, কিন্তু সেই জ্ঞান তখনই মূল্যবান হয় যখন তা মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয়”-এমন বক্তব্য দিয়ে নৈতিক, আদর্শিক ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
সোমবার(২৭ অক্টোবর )দুপুরে কারমাইকেল কলেজের শহীদ মিনার এর সামনে মাঠে রংপুরে অনার্স ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের নবীনবরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,বিগত দিনে ছাত্ররাজনীতির নামে অনেকেই শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাস, অনিয়ম ও বৈষম্যের আস্তানায় পরিণত করেছে। ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।এখন সময় এসেছে সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সত্য,ন্যায় ও নৈতিকতার ভিত্তিতে নতুন প্রজন্মের সমাজ গঠনের।”
তিনি আরও বলেন,ছাত্রজীবনের তিন–চার বছরের সময় সবচেয়ে মূল্যবান। এই সময়ে শুধু পরীক্ষার প্রস্তুতি নয়, নৈতিক চরিত্র গঠন, দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বগুণ বিকাশের দিকেও মনোযোগী হতে হবে। কারণ, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজের চালিকাশক্তি।”
জাহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন,আমাদের লক্ষ্য শুধু ব্যক্তিগত সফলতা নয়, বরং একটি কল্যাণমুখী ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা।এজন্য প্রয়োজন আত্মশুদ্ধি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও নৈতিকতার চর্চা। শিক্ষা যদি নৈতিকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে তা সমাজে প্রকৃত শান্তি আনতে পারে না।”
অনুষ্ঠানে অনার্স প্রথম বর্ষের ১,৬০০ নবীন শিক্ষার্থীর মধ্যে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিগত বছরের বিভাগভিত্তিক প্লেসধারী কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাহবুবার রহমান বেলাল, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যপরিষদ সদস্য,বলেন-জ্ঞান ও নৈতিকতার সমন্বয় ঘটলেই সত্যিকারের শিক্ষা অর্জিত হয়। আজকের শিক্ষার্থীরা যদি আদর্শের পথে দৃঢ়ভাবে অটল থাকে, তাহলে এই সমাজে অন্যায় ও দুর্নীতি টিকতে পারবে না।”
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোলাম আজম, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর,বলেন-বর্তমান প্রজন্মকে সৎ, পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবার, শিক্ষক ও শিক্ষাঙ্গনের সম্মিলিত ভূমিকা অপরিহার্য।”
মহানগর শিবির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন,নবীনদের স্বাগত জানাতে আমরা যেমন আনন্দিত, তেমনি তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্বও বেড়ে গেছে। তারা যেন শিক্ষাজীবনের শুরুতেই সৎ উদ্দেশ্য ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যায়- সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, এ আয়োজন তাদের অনুপ্রাণিত করেছে। তারা শুধু ভালো ফল নয়, বরং নৈতিক মূল্যবোধ ও নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেন।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, এই আয়োজন তাদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং তারা প্রতিজ্ঞা করেন- শুধু ভালো ফল নয়, বরং নৈতিক মূল্যবোধ, নেতৃত্বগুণ ও দায়িত্ববোধ অর্জনের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল মহানগর ছাত্রশিবির।পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল উচ্ছ্বাস, অনুপ্রেরণা ও নতুন প্রতিশ্রুতির আহবান।
মন্তব্য (০)